সকাল–বিকেল আয়েস করে গরম গরম চায়ের কাপে চুমুক দেন না এমন মানুষ খুব কমই চোখে পড়ে। তার ওপর করোনা অতিমারীতে চায়ের কদর আরও বেড়েছে। তবু ভাগ্যের বদল হয়নি এই মানুষগুলোর। যারা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন চা-বাগানগুলিতে। এবার তাঁদের পাশে দাঁড়াল বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন BTWEU। ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর ডুয়ার্সের সমস্ত চা বাগানে গেট মিটিংয়ের ডাক দিয়েছে বিজেপির চা–শ্রমিক সংগঠন। প্রথম দিনেই একাধিক চা বাগানে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিজেপির চা-শ্রমিক সংগঠন তরফে বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। যেমন, চা বাগানের শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রদান, টাফ ও সাব স্টাফদের বেতনবৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, পুজোর বোনাস বৃদ্ধি প্রভৃতি। এছাড়া আরও কয়েকটি ইস্যুতে উত্তরবঙ্গের একাধিক চা-বাগানে গেট মিটিং করছে বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির দাবি, ২০১৮ সালের পর চা শ্রমিকদের আর মজুরি বাড়েনি। রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে চা শ্রমিকেরা দৈনিক ১৭৬ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান বাজারদরের কথা মাথায় রেখে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বিরোধীরা একজোট হয়ে নানা আন্দোলনও করেছে। খোদ তৃণমূল নেতাদের একাংশের কথায়, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিরোধীদের এই আন্দোলনেরই ফসল ঘরে তুলছে বিজেপি। যার জেরে গত লোকসভা নির্বাচনে চা–বাগান অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপির কাছে তাদেরকে পর্যুদস্ত হতে হয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও চা বলয়ে বিজেপি অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে এই ইস্যুতে।
ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন শাসকদলের নেতারা। বিজেপি মূলত চা বাগানের শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রদান, নুন্যতম হাজিরা নিশ্চিত করা সহ কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিকে সামনে রেখেই আন্দোলন গড়ে তুলছে। ফলে উত্তরবঙ্গের একটা বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে শাসকদনের জমি বিজেপির দখলে আসছে ধীরে ধীরে। আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আগামীদিনে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে হলে উত্তরবঙ্গে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করার লক্ষ্যে চা-বাগানে নিজেদের সংগঠন আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিল রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
Post a Comment
Thank You for your important feedback