অর্জুন সিংয়ের বাড়ির সামনেই বোমাবাজি, আবারও উত্তপ্ত ভাটপাড়া

বৃহস্পতিবার রাতে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়ি ঘিরেই চলল ব্যাপক বোমাবাজি। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়ল অর্জুন সিংয়ের বাড়ির ঢিল ছোঁড়া দূরেই। এরপরই ভাটপাড়ায় উত্তেজনা ছড়ায়। বোমাবাজির ফলে যদিও সাংসদ ও তাঁর পরিবারের লোকজনের কেউ আহত হননি। পুরো ব্যাপারটি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিচ্ছেন সাংসদ অর্জুন সিং। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় এক দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিজেপির সহ-সভাপতি অর্জুন সিং। পাশাপাশি আরও কয়েকটি দলীয় কর্মসূচি সেরে রাতেই বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপরই শুরু হয় বোমাবাজি। অভিযোগ, মুখে গামছা বেঁধে একদল দুষ্কৃতী বোমাবাজি করে চম্পট দেয়। বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, ‘আমি বাড়ি ঢোকার সময়েই এখানে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করেছিলাম। পরে জামাকাপড় ছেড়ে নীচে এসেছিলাম আমার নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করতে। কিন্তু কিছু বলার আগেই মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়তে শুরু করল’।
এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গিয়েছে বোমাবাজির ছবি। অর্জুন সিংয়ের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীরা দুষ্কৃতীদের তাড়া করেন। ফলে বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তেই পালায় দুষ্কৃতীরা। অর্জুন সিংয়ের দাবি, একেবারে বাড়ির সামনেই কয়েকটি বোমা পড়েছে। বাকি একটি মন্দিরের ওপর ও আশেপাশে পড়েছে। বিজেপি সাংসদের দাবি, তাঁকে খুন করার ছক কষেছে শাসকদল। তার জন্যই এই হামলা। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তৎকালীন ভাটপাড়ার সাংসদ অর্জুন সিং। এরপর বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে সাংসদ হন। এমনকি ভাটপাড়ার উপনির্বাচনেও ছেলে পবন সিংকেও বিজেপির টিকিটে জিতিয়ে আনেন।
এরপরই ভাটপাড়া-কাঁকিনারা এলাকা রাজনৈতিকভাবে স্পষ্টতই দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। তৃণমূলের একাংশই অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে বিজেপির দিকে যায়। এরপরই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাটপাড়া-কাঁকিনারা এলাকা। প্রায় দুমাসের অধিক সময় কার্যত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল ভাটপাড়া-কাঁকিনারার বিস্তৃর্ণ এলাকা। রোজই বোমাবাজি-গুলি, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে ছিল এই এলাকা। মাঝে করোনা আবহে কিছুদিন গোলমাল বন্ধ ছিল। এবার ফের শুরু হয়েছে গোলমাল।
শুক্রবার সকালে সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বক্তব্য, পুলিশের গাড়ি ছিল রাতে। পুলিশের সামনেই অবাধে বোমাবাজি করে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। রাতভর চলল বোমাবাজি, তবুও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। অথচ, আমার বাড়িতে রোজই চলে আসছে তল্লাশি করার নাম করে। এর থেকেই বোঝা যায় পুলিশের ভূমিকা কী। অপরদিকে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেই গোলমাল বাঁধাচ্ছেন অর্জুন। শুক্রবার সকালেও এলাকা থমথমে, এলাকায় চলছে পুলিশের টহল। যদিও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post