কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে তীব্র যানজট, নাজেহাল অফিসযাত্রী

করোনা আবহে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। ফলে শহরতলির হাজার হাজার অফিসযাত্রীর এখন ভরসা সড়কপথ। এই পরিস্থিতিতে বাসের ভরসা না করে অনেকেই মোটরবাইক, স্কুটি বা গাড়ি ভাড়া করেই অফিসমুখী হয়েছেন। ফলে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। কিন্তু রোজই যানজটে আটকে নাভিশ্বাস অবস্থা নিত্যযাত্রীদের। সকাল সকাল অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে অফিস ঢুকতে বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে যাচ্ছে অনেকের। টানা তিনদিন ছুটি (শনি-রবিবার ও সোমবার লকডাউন) থাকার পর মঙ্গলবার বেশিরভাগ মানুষই কর্মক্ষেত্রে বের হয়েছিলেন। কিন্তু এদিন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে তীব্র যানজটে নাজেহাল হতে হল নিত্যযাত্রীদের।
ব্যারাকপুর ওয়ারলেস মোড় থেকে দোপেড়িয়া মোড় হয়ে সোদপুরের মুড়াগাছা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৪-৫ কিমি দীর্ঘ যানজটে স্তব্ধ হয়ে যায় গাড়ির চাকা। প্রায় ঘন্টা খানেক দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অফিসমুখো যাত্রীদের। অথচ রাস্তায় দেখা নেই ট্রাফিক পুলিশের। যে যেমনভাবে পেরেছেন গাড়ি বা বাইক নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করেছেন। আর তাতেই যানজট আরও তীব্র হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর থেকেই থমকে গিয়েছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। ঘন্টাখানেক যানজটে আটকে থাকার পর বাধ্য হয়ে যাত্রীরাই হাত লাগালেন রাস্তা খালি করতে। তবুও দেখা পাওয়া যায়নি ট্রাফিক বা পুলিশকর্মীদের। এমনটাই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের।
উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া জেলার বিশাল সংখ্যক অফিসযাত্রী বা কলকাতায় নানা কাজে আসা মানুষজনের এখন নাজেহাল অবস্থা। নদিয়ার কল্যাণী, মদনপুর, চাকদা, রানাঘাট থেকেও যেমন অফিসযাত্রীরা রোজ বা সপ্তাহে এক-দুদিন কলকাতায় আসছেন অফিসযাত্রীরা। তেমনই উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, কাঁকিনারা, শ্যামনগর বা ব্যারাকপুর এলাকা থেকে অসংখ্য মানুষ রোজ যাতায়াত করছেন কলকাতায়। সরকারি বা বেসরকারি বাসের ভরসা খুবই কম। কারণ পর্যাপ্ত বাসের অভাব। অগত্যা অনেকেই কিনে ফেলেছেন বাইক বা স্কুটি। কিন্তু গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো অত্যন্ত খারাপ অবস্থা বিটি রোডের। দুচাকা বা ছোট গাড়ির পক্ষে বিটি রোডে চলাচল করা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বিকল্প রাস্তা হিসেবে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েকে বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও সমস্যা। রাস্তা চওড়া করার কাজ চলছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে। নৈহাটি থেকে বেলঘড়িয়ার নিমতা পর্যন্ত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই দু-লেনের আরেকটি রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। এরজন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফ্লাইওভার তৈরির কাজও চলছে। ফলে এমনিতেই ওই এলাকায় ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। এর ওপর গাড়ির চাপ বাড়ায় এদিন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। সাধারণ যাত্রীদের দবি, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা ভিআইপিদের পাশ করাতেই ব্যস্ত থাকেন। অন্য সময় তাঁদের দেখা পাওয়া যায় না। ফলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাড়ি চলাচলে রোজই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post