রঘুনাথগঞ্জের ‘পেটকাটি মা’, লকডাউনে অনাড়ম্বরেই হল দেবীর বোধন

করোনা আবহে এবারের দুর্গাপুজো কতটা জাকজমক করে হবে সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পুজোর আয়োজন করা নিয়েই বেশিরভাগ পুজোকমিটি চিন্তিত। কিন্তু ‘মা পেটকাটি’ মন্দিরের চিত্রটা অবশ্য একেবারে ভিন্ন। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের গদাইপুর গ্রামে রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির। গ্রাম বাংলার প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। প্রায় ৩০০ বছরের বেশি সময় এই মন্দিরে পুজো হয়ে আসছে মা পেটকাটি-র।
এই মন্দির নিয়ে স্থানীয় মানুষদের কাছে রয়েছে অসংখ্য জনশ্রুতি। কেন এই অদ্ভুত নাম? লোকশ্রুতি, বহুকাল আগে অষ্টমীর সন্ধি পুজোর সময় এই মা একটি বাচ্চা মেয়েকে গিলে নেয়। শিশুকন্যাটিকে খুঁজে না পাওয়ায় শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কোথাও পাওয়া না গেলে সকলেই যখন হতাশ তখন পুরোহিত দেখতে পান দেবীর মুখে শিশুটির পোশাকের অংশ বেরিয়ে আছে। এরপর মায়ের পেট কেটে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই দেবীর নাম হয় ‘পেটকাটি মা’।
একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে হয় এখানকার দুর্গাপুজো। পঞ্জিকা মতে ষষ্ঠীর ৪১ দিন আগে এখানে শুরু হয় পুজো। পিতৃ পক্ষের কৃষ্ণানবমীর আর্দ্রা নক্ষত্র থেকেই নিয়ম মেনে দেবীর আরধনা শুরু হয়। করোনার দাপট সত্বেও এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। এ বারে মলমাস পড়ায় তিথি এগিয়ে এসেছে অনেকটা। ফলে শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে গেল দেবীর বোধন। মহালয়া পর্যন্ত পৌরাণিক নিয়মে হবে দেবীর পুজো।। তারপর প্রতিপদ পর্যন্ত চলবে নিত্যপুজো। প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত বিশেষ পুজোর পর সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত হবে দেবীর মহাপুজো।
প্রতিবছরই মহা ধুমধামে এই মন্দিরে পুজোর আয়োজন করেন এলাকার বাসিন্দারা। পুজোর একমাস ভিড়ও হয় প্রচুর। কিন্তু এবার করোনার জেরে মাত্র কয়েকজন ছিলেন পুজোর আয়োজনে। লকডাউন পরে যাওয়ায় কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। তবে নিয়ম-নীতি মেনেই মা পেটকাটি-র বোধন হয়ে গেল। এবার অপেক্ষা মহাপুজোর।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post