সম্ভ্রান্ত পরিবারের বেড়ে ওঠা এক মহিলা দিদির বাড়িতে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনায় জখম হয়ে পড়েছিলেন রাস্তায়I এক সহৃদয় ব্যক্তি সেই মহিলাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করেই ভর্তি করে দেয় হাসপাতালেI হাসপাতালেই সেবা-শুশ্রূষা করেই তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলেন চিকিৎসক ও নার্সরাI কিন্তু মানসিক অসুস্থতা দেখা দেওয়ায় জানা যাচ্ছিল না তাঁর বাড়ির ঠিকানাI শেষমেষ দীর্ঘ দুই বছর বাদে হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা ওই নিখোঁজ মহিলার ছবি সোশাল মিডিয়ায় দেওয়ার পরই রাতারাতি খোঁজ মেলে তাঁর পরিবারেরI হাসপাতাল ও পুলিশের যৌথ প্রয়াসে অবশেষে নিজের পরিবারকে ফিরে পেতে চলেছেন ওই অসহায় মহিলা। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা। যেহেতু তিনি পরে নিজের নাম গোপা দাস ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছিলেন না তাই তাঁকে মানবিক কারণেই হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডে রেখে দেওয়া হয়I মুখে সর্বদা লেগে থাকা হাসি অচিরেই মন জয় করে নেন হাসপাতালের কর্মচারী, সেখানে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের আত্মীয়দেরI বারংবার বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে উত্তর চব্বিশ পরগনার আগরপাড়া এবং দুর্গানগরের নাম বলতেনI তাতেই বিভ্রান্তি বাড়ে। একটানা দু'বছর গোপা দেবীর ঠিকানা বলতে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডটাইI জেলা প্রশাসনকে গোপা দেবীর কথা জানালেও মেলেনি কোন খোঁজখবরI হাসপাতালে সুপার মাসুদ হোসেন আলি নির্দেশ দেন গোপা দেবীর ছবি সহ প্রশাসনিত দফতরে পৌঁছে দিতে। ফেসবুকে গোপাদেবীর ছবি পোস্ট হওয়ার পরই মধ্যেই সেই পোস্ট দুশো জায়গায় শেয়ার হয়ে যায়I তারপরেই সেই খবর পায় হ্যাম রেডিওI অল্প সময়ের মধ্যেই সন্ধান মেলে পরিবারের সদস্যদেরI জানা গিয়েছে, গোপা দেবীর বাড়ি নদিয়া জেলার গয়েশপুরেI বাবা রমনীমোহন দাস আগরপাড়া প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেনI তিন দাদা ও দুই বোনের মধ্যে গোপা সবার ছোটI বাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে তাঁকে আবার নিয়ে যাবেন সেই কথা জানতে পেরে বেজায় খুশি হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাI গোপা দেবী কাঁপা কাঁপা গলায় জানান, 'হাসপাতালে আমাকে আপন করে রেখেছে সবাইI তার মধ্যেও মনে পড়ে বাড়ির লোকেদের কথাI আজীবন ভুলব না হাসপাতালের প্রত্যেকের অকৃত্রিম ভালবাসাI'
Post a Comment
Thank You for your important feedback