পুরোনো শত্রুতার জেরেই কি খুন? মণীশ শুক্লা খুনে গ্রেফতার দুই

 

ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা খুনের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ধৃতদের নাম মহম্মদ খুররম ও গুলাব শেখ। এরমধ্যে মহম্মদ খুররামের সঙ্গে মণীশের বহু পুরোনো শত্রুতা ছিল বলে জানতে পেরেছে সিআইডি তদন্তকারীরা। এই শত্রুতার জেরেই খুররম মণীশকে খুনের ছক করে। গুলাব শেখ পেশাদার শুটার। পেশায় ব্যবসায়ী খুররম মণীশকে খুনের জন্যই যোগাযোগ করে পেশাদার শুটার গুলাব শেখের সঙ্গে। গোয়েন্দাদের দাবি, পুরোনো আক্রোশ মেটাতেই এই খুন করে খুররম। রবিবার ভরসন্ধ্যায় টিটাগড় থানার কাছেই প্রকাশ্য রাস্তায় খুন হয় বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা। জানা গিয়েছে, উন্নতমানের নাইন এমএম কার্বাইন থেকে গুলি চালানো হয়েছিল। মণীশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়।

এই দুই বাইকেই আসে আততায়ীরা (সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া)

সোমবার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। দুপুরেই সন্দেহভাজন দু’জনকে আটক করে তাঁরা। রাতভর দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মঙ্গলবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দুজনকে। রাজ্য পুলিশের তরফে সোমবার এক টুইট করে বলা হয়েছিল মণীশ হত্যায় দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের এই টুইটে ইঙ্গিত ছিল, মণীশ-হত্যায় রাজনীতি নয়, দায়ী পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। যদিও রাজ্য পুলিশ ও সিআইডি-র এই তত্ত্বকে মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি সিবিআই তদন্ত। বিজেপি নেতাদের দাবি, মণীশকে হত্যা করতে যে এমএম কার্বাইন ব্যবহার করা হয়েছে সেটা পুলিশই ব্যবহার করে। অপরদিকে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, মোট ১৪টি বুলেটের ক্ষত পাওয়া গিয়েছে মণীশের শরীরে। দেহে আটকে থাকা ‘বুলেট হেড’ দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ ৭ এমএম পিস্তল থেকে গুলি করা হয়েছে।

গুলি চালিয়ে চম্পট দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা (সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া)

মণীশের কাছে একটি লাইসেন্স করা পিস্তল ছিল। যদিও সেটি এখন পুলিশের কাছেই জমা রয়েছে। কারণ ওই পিস্তলটি ভিনরাজ্য থেকে লাইসেন্স করা। তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করার জন্যই পুলিশের কাছেই জমা রয়েছে পিস্তলটি। তদন্তকারীদের অনুমান, দুষ্কৃতীরা এই খবর জানত। সেইমতো খুনের ছক করা হয়। দুটি বাইকে দুষ্কৃতীরা এসেছিল। একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে তদন্তকারীরা। সেখানেই দেখা যাচ্ছে কিভাবে দুজন বাইকে করে এসে গুলিতে ঝাঁঝরা করে চম্পট দেয় তারা। বাইক দুটিও চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, মহম্মদ খুররমের বাবা ছিলেন সিপিএম নেতা। তিনিও খুন হয়েছিলেন। ওই খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় মণীশের। সেই থেকেই মণীশের ওপর আক্রোশ ছিল খুররমের।

গুলি চালাচ্ছে দুই দুষ্কৃতী (সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া)

এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি পুলিশের। অপরদিকে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দাবি, তাঁর এবং তাঁর অনুগামীদের উপর প্রাণঘাতী হামলা হতে পারে সেটা আগেও বহুবার বলেছি। তবুও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আর যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে সেটা পুলিশ ব্যবহার করে। বাকিটা আপনারা বুঝে নিন। বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র দাবিও এক, তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ এই খুনের মোটিভ রাজনীতি থেকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। সিবিআই তদন্তেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এই টানাপোড়েনের মধ্যেই সোমবার গভীর রাতে মণীশের দেহ সৎকার করা হয় কড়া পুলিশি নিরাপত্তায়।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post