নতুন রূপে মৌসুনী দ্বীপ, সপ্তাহান্তের ছুটিতে ঘুরে আসুন নির্জন সৈকতে


সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকেই শুনেছেন মৌসুনী দ্বীপের নাম। কেউ কেউ ঘুরেও এসেছেন এই সদ্য পরিচিত পর্যটন কেন্দ্র থেকে। আবার অনেকে যাবেন বলে চিন্তাভাবনা করছিলেন। কিন্তু এলাকাটির জনপ্রিয়তা বাড়ার আগেই একসঙ্গে আমফান-করোনার জোড়া ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়ে এখানকার অর্থনীতি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক্কেবারে শেষ প্রান্তে নামখানা ব্লকের বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে এই দ্বীপ নির্জনতায় পরিপূর্ণ।

 

 ফলে শান্তিপ্রিয় মানুষ, কয়েকটা দিন প্রকৃতির কোলে নির্জনে কাটাতে এবং সমুদ্রের ঢেউ গুনতে এখানে আসতেন। যদিও এখানে নেই কোনও পাকা হোটেল বা রিসর্ট। তবে গুটিকয়েক কাঠের রিসর্ট ও তাঁবু-ঘরকে কেন্দ্র করেই জমে উঠছিল মৌসুনী দ্বীপের পর্যটন। কিন্তু, প্রথমে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান এবং পরে দীর্ঘকালীন লকডাউন, শেষ করে দেয় মৌসুনী দ্বীপের পর্যটন, এখানকার অর্থনীতি। 


 

মাস ছ'য়েকের লকডাউন পর্ব কাটিয়ে নিউ নর্মালে খুলে গিয়েছে একের পর এক পর্যটন কেন্দ্র। খুলেছে মৌসুনী দ্বীপও। কিন্তু আমফান ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল দাপটে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে এখানকার অধিকাংশ রিসর্ট ও তাঁবু। লকডাউনের জেরে বন্ধ ছিল পর্যটনও। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য মৌসুনী দ্বীপে ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে বেশ কয়েকটি হোম-স্টে। 

 

এখানে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য অঢেল ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেমন মৌসুনী দ্বীপে প্রবেশের পরই পর্যটকদের ডাবের জল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এরপর খাওয়াদাওয়ায় রাখা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের বিপুল সমাহার। পাশাপাশি ক্যাম্প ফায়ার, বার-বি-কিউ সহ লোকনৃত্য ও গানের আসর থাকছে। এই হোম-স্টে গুলিকে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এলাকার অর্থনীতি। 




পাশাপাশি খুশির খবর, এবার সরাসরি রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে মৌসুনী দ্বীপের পর্যটন শিল্পের বিকাশে। এখানে গ্রামীণ পর্যটনের বিকাশ করবে সরকার। কাজে লাগানো হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে।  রাজ্যের পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌসুনি দ্বীপের গ্রামীণ পরিবেশকেই থিম করে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

 

 নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর জানিয়েছেন, পর্যটনের বিকাশের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির বিকাশের কথাও ভাবা হয়েছে। এ বিষয়ে নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, ‘‘জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে কংক্রিটের হোটেল ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মৌসুনি দ্বীপের গ্রামীণ পরিবেশকেই থিম করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ভাবা  হয়েছে। নামখানার বিডিও শান্তুনু ঠাকুর জানিয়েছেন, 'এই দ্বীপে পর্যটনের পাশাপাশি এলাকার শিল্প-সংস্কৃতি এবং গানকে একই ছাতার তলায় নিয়ে আসা হবে'। 


 


এছাড়া মৌসুনী দ্বীপে পর্যটনের প্রসারের জন্য নামখানা ব্লক প্রশাসনও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যেমন, এই দ্বীপের বালিয়ারা এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে আধুনিক পরিকাঠামো। সেখানে থাকবে, মাটির কটেজ। সমস্ত আধুনিক সুবিধাযুক্ত এই কটেজে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা ছাড়াও থাকছে আশেপাশের দ্বীপগুলিতে নৌকা ভ্রমণ। রাতে স্থানীয় লোকশিল্পীদের নানা অনুষ্ঠান হবে বাড়তি পাওনা।


 


কীভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে মৌসুনী দ্বীপের দুরত্ব কমবেশি ১২১ কিলোমিটার। নামখানার কাছেই এই নির্জন পর্যটন কেন্দ্রটি। ফলে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার নামখানা লোকাল ধরে সহজেই চলে আসা যায় নামখানা। এখান থেকে বাস বা গাড়ি করে চলে আসুন চিনার নদীর পাড়ে। নৌকায় নদী পেরিয়ে মৌসুনী দ্বীপে। এই দ্বীপেও রয়েছে প্রচুর টোটো ও ব্যাটারি চালিত ভ্যান। এছাড়া ধর্মতলা থেকে বকখালি যাওয়ার বাস ধরেও মৌসুনী দ্বীপের কাছে চলে আসা যায়। 





Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post