সল্টলেকে বাড়ির ছাদেই মিলল কঙ্কাল, ছেলে খুনে গ্রেফতার মা!

 

সল্টলেকের এজে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়ি। এই বাড়িতেই একসময় সপরিবারে থাকতেন মহেনসরিয়া পরিবার। কিন্তু ইদানিং কর্তা-গিন্নির মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরে নিউটাউনের একটি আবাসনে একলাই থাকছিলেন বাড়ির কর্তা অনিল মহেনসরিয়া। তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে সল্টলেকের বাড়ির ছাদ থেকে মিলল পূর্ণবয়স্ক কোনও ব্যক্তির প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া পচাগলা একটি দেহ। তার আগে পেশায় ব্যবসায়ী অনিল মহেনসরিয়া বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ করেছিলেন তাঁর বড় ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে স্ত্রী।

 অভিযোগ পেয়ে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায় বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ। তল্লাশির সময়ই ওই বাড়ির ছাদ থেকে পচগলা প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। বিধাননগর গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সন্দেহ, নিজের বড় ছেলেকে খুন করেছে মা অর্থাৎ ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী গীতা। তাঁকে জেরার পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ, তারসঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর ছোট ছেলেকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। 

এই বাড়ির ছাদ থেকেই মিলেছে কঙ্কাল

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অনিল মহেনসরিয়া পুলিশের কাছে দাবি করে, তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে স্ত্রী। পুলিশের কাছে নিজের বয়ানে ওই ব্যবসায়ী বলেছেন, ইদানিং তিনি আলাদা থাকছিলেন সাংসারিক অশান্তির জেরে। আর দুই ছেলে অর্জুন (২৫) ও বিদুর (২২) এবং মেয়ে বৈদেহী (২০)-কে নিয়ে সল্টলকের এজে-২২৬ নম্বর বাড়িতে থাকতেন গীতা মহেনসরিয়া। 

অনিল পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি জানতে পারেন গত ২৯ অক্টোবর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে রাঁচিতে নিজের বাপের বাড়ি চলে যায় গীতা। কিন্তু পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানেন সেখানে বড় ছেলে অর্জুন নেই। এই ব্যাপারে গীতাকে জিজ্ঞেস করলেও গীতা জানান অর্জুন রাঁচিতেই আছে। এরপরই খোঁজখবর শুরু করেন অনিল। কোথাও খোঁজ না পেয়েই তাঁর সন্দেহ হয় ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তিনি বিধাননগর-পূর্ব থানার দ্বারস্থ হন। 

তদন্তে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সালে অনিল এবং গীতার বিয়ে হয়েছিল। সল্টলেকের এ জে ব্লকের ২২৬ নম্বর বাড়িটি তাঁর স্ত্রী গীতার নামেই রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় মাস দুয়েক ধরেই বাড়িটি তালাবন্ধ ছিল। সেখানে কাউকে যাতায়াত করতেও দেখা যায়নি। তদন্তে নেমে পুলিশ জেরা শুরু করে গীতাকে। জেরায় অসঙ্গতি পাওয়ার পরই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

ছোট ছেলে বিদুরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। কঙ্কালটি উদ্ধার করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেটি আদতে কার বা কতদিনের পুরোনো সেটা জানতে পারলে তদন্তের মোড় ঘুরতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই গীতা মহেনসরিয়ার বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেছে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post