করোনার টিকাকরণের পরই সিএএ-এনআরসিঃ অমিত শাহ


দু’দিনের সফর শেষে বোলপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর আগে বোলপুরে রোড শো করেন তিনি। সেখানে বিপুল জনসমাগম দেখে মাইক হাতেই সাধারণের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান বিজেপিকে একবার সুযোগ দেওয়ার। তিনি দাবি করেছিলেন, বিজেপিকে সুযোগ দিলে পাঁচ বছরের মধ্যে সোনার বাংলা গড়ে দেবেন। সবশেষে বোলপুরে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসকে একহাত নিলেন। 

পাশাপাশি বেআইনি অনুপ্রবেশ, সিএএ, এনআরসি, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা এবং নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গেও নিজের বক্তব্য রাখেন অমিত শাহ। তিনি এদিন প্রশ্ন তোলেন, উন্নয়নের নিরীখে বাংলা আজ এক নম্বরে কোথায়? অথচ দিদি সারাক্ষণ দাবি করেন বাংলা সব দিক থেকেই এক নম্বরে। শিক্ষা, চিকিৎসা- সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে বাংলা, অথচ পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, তোলাবাজিতে এক নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এরপরেই তাঁর বিস্ফোরক দাবি, এই রাজ্যে জন্ম নেওয়া কোনও শিশুর মাথার ওপর ৫০ হাজার টাকা করে ঋণ জমছে। কয়েকটি পরিসংখ্যান দিয়ে এদিন অমিত শাহ বাংলার দৈনদশা তুলে ধরেন। 


 

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, দেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল, শিল্প ক্ষেত্রে বাংলার অবদান ছিল ৩০ শতাংশ, এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিন শতাংশে। চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদনেও পশ্চিমবঙ্গের অংশীদারিত্ব ছিল ৭০ শতাংশ, অথচ এখন সেটা ৭ শতাংশে ঠেকেছে। মাথাপিছু আয়েও এই রাজ্য অনেক পিছিয়ে বলে দাবি করেন অমিত শাহ। তাঁর দাবি, ১৯৬০ সালে বাংলার মাথাপিছু আয় মহারাষ্ট্রের থেকে ১৬০ গুন বেশি ছিল, এখন সেটা মহারাষ্ট্রের অর্ধেক। এনআরসি, সিএএ নিয়েও এদিন স্পষ্ট বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি পরিস্কার জানিয়ে দিলেন, করোনার প্রকোপের জন্য আপাতত এই প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। টিকাকরণ শেষ  হলেই আবার শুরু হবে সিএএ ও এনআরসি প্রক্রিয়া। যা হবে সবাইকে জানিয়েই করা হবে বলেই দাবি করলেন অমিত শাহ।

রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা নিয়েও সরব হলেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, কিছু দিন আগে আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সফরে তৃণমূলের কর্মীরা যে ভাবে হামলা চালিয়েছে, বিজেপি তার নিন্দা করে, ব্যক্তিগত ভাবেও আমি তার নিন্দা করি। এরপরই অমিত শাহর কটাক্ষ, এর জন্য দায়ী তৃণমূলের ক্ষমতার দম্ভ, আর যত এই ধরণের হামলার ঘটনা ঘটবে বিজেপি ততই শক্তিশালী হবে। তিনি আরও জানান, হামলার পাল্টা হামলা যেন না হয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই জবাব দিতে হবে। 


 

 

সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহ দাবি করেন, রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেই সঙ্গে দুর্নীতিও। দুর্নীতি ইস্যুতে অমিত খোঁচা, আমফান মোকাবিলায় কেন্দ্র যা টাকা দিয়েছিল সেটা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এমনকি করোনার জেরে লকডাউনে কেন্দ্রের তরফে ৯ মাসের খাবার পাঠানো হয়েছিল, সেটাও হাওয়া করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। তৃণমূল নেত্রীর পথশ্রী প্রকল্পকেও প্রবল খোঁচা দিয়েছেন অমিত শাহ। 

 

তিনি এদিন বলেন, গর্তে ভরা রাস্তা, না রাস্তার মধ্যে গর্ত, বোঝাই মুশকিল। কেন্দ্র এতদিন যে সমস্ত প্রকল্পে টাকা দিয়েছিল, সেই টাকার বেশিরভাগই খরচ করা হয়নি বলেই দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপরই বহিরাগত তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে অমিত শাহ বলেন, মমতা দিদি, আপনি চিন্তা করবেন না, আপনার সরকার আর থাকবে না। এদিন রাত ৮টা নাগাদ অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে দিল্লির বিমান ধরবেন অমিত শাহ। 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post