আসানসোলে প্রথম ট্রেন-রেস্তোরাঁ চালু পূর্ব রেলের


লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল রেলের চাকা। পরে পরিযায়ী শ্রমিক ও আটকে পড়া পর্যটকদের ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালায় রেল কর্তৃপক্ষ। এরপর আনলক পর্ব শুরু হলে সীমিত পরিসরে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল শুরু করে। কিন্তু আসল কথা হল এই দীর্ঘ লকডাউন পর্বে আমূল পরিবর্তন এসেছে রেলের পরিকাঠামোয়। একদিকে যেমন রেলস্টেশনের ভোলবদল হয়েছে অন্যদিকে ট্রেন পরিষেবায় বিপুল পরিবর্তন এনেছে রেল। যাত্রী সুরক্ষা ও সৌন্দর্যায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বলেই রেলের দাবি। পূর্ব রেলের তরফেও নতুন উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরই অঙ্গ হিসেবে আসানসোল স্টেশনে চালু হয়ে গিয়ে আশ্চর্য রেস্টুরেন্টে। যার নাম 'Restaurant on Wheels', এটা নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন দেখছে রেল কর্তৃপক্ষ। ব্যাপারটা কীরকম? ট্রেনের পুরোনো বাতিল দুটি কামরার ভোল বদলে রেস্টুরেন্টের আকার দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে একটি উন্নতমানের রেস্টুরেন্ট ও অপরটি সুসজ্জিত কফিবার, নাম “চায়ে চুন”। 


পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের পুরোনো সম্পত্তি কীভাবে ব্যবহার করে আয় বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে প্রস্তাব চেয়েছিল রেলমন্ত্রক।  তাতেই এই ধরনের রেস্টুরেন্ট চালুর প্রস্তাব আসে। যেটা মনে ধরে পূর্ব রেলের কর্তাদের। শিলিগুড়ি ও আসানসোলের দুটি সংস্থা রেলের বাতিল কামরা সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেস্তোরাঁ ও কফিবার চালু করার প্রস্তাব দেয়। রেল সেই দুই সংস্থাকেই বরাত দেয়। এরজন্য দুটি বাতিল কামরাকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নতুন করে রেস্তোরাঁ কফিশপের রূপ দিয়েছে রেল। একটিতে ৪২ আসনের আধুনিক রেস্তোরাঁ ও অন্যটিতে চা-কফি-স্ন্যাকসের স্বাদ নিতে পারছেন রেলযাত্রীরা। গত ফেব্রুয়ারিতে চালু হয়েছে "চায়ে-চুন" নামে এই ট্রেন-রেস্তোরাঁ।


বাইরে থেকে একঝলক দেখলে মনে হবে যেন ট্রেনের কামরা দাঁড় করানো আছে, ওই দুটি কামরার সঙ্গে জোড়া হয়েছে একটি পুরোনো স্টিম ইঞ্জিন। যার নাম "তিলোত্তমা"। কিন্তু কামরার ভিতর ঢুকলেই ভ্রম ভেঙে যাবে, পুরোদস্তুর আধুনিক এক রেস্তরাঁ। পাশের কামরা হয়েছে কফিবার, যেখানে চা-কফি-স্ন্যাকস দিনভর পাচ্ছেন যাত্রীরা। আসানসোলের ডিআরএম জানিয়েছেন, রেস্তোরাঁটি আসানসোলের এক সংস্থা এবং কফিবারটি শিলিগুড়ির এক সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁদের কাছ থেকে বছরে টাকা পাবে রেল। তাঁর আরও দাবি, বছরে ৫০ লাখ পর্যন্ত আয় হবে রেলের। 


এই ধরণের ট্রেন-রেস্তোরাঁ পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে প্রথম উদ্যোগ। উল্লেখ্য, লকডাউনের পর ট্রেন চলাচল শুরু হতেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে রেলের এই রেস্টুরেন্ট ও কফিবার দুটি। পূর্ব রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে অন্যান্য স্টেশনেও এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post