কথাই আছে ক্রিকেট রাজার খেলা, কথাটা উড়িয়ে দেওয়ার
নয়। ব্রিটিশ জমানায় এদেশে রাজপরিবারের প্রতিনিধিরাই ক্রিকেট খেলতেন এবং
ভারতীয় দলে সুযোগ জুটত তাঁদেরই। সেই ট্র্যাডিশন সমানেই চলেছে, গরিব ঘর
থেকে খেলোয়াড় উঠবে কী করে, একটা ব্যাটের দামে একমাসের খাওয়া হয়ে যায়।
৬০ দশকের শেষভাগে ভারতীয় দলে সুযোগ পান প্রয়াত একনাথ সোলকার। তাঁর বাবা
মাঠের মালি ছিলেন, বাবার সাথে মাঠে গিয়ে টুকটাক খেলা দেখতে দেখতে একসময়
মুম্বইয়ের ক্লাবে পরে রাজ্য দলে, শেষে ভারত দলে সুযোগ পান। বাঁ হাতি
অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি এবং বলা যায় ভারতের সর্বকালের সেরা ক্লোজ ফিল্ডার।
তাঁর পর আজকের মহাম্মদ সিরাজ।
বাবা হায়দরাবাদের অটোচালক ছিলেন, শুনলেন
ছেলেরা ক্রিকেট খেলে। গরিব বাবা কোথা থেকে ক্রিকেটের টাকা জোগাবেন? বড়ো
ভাই খেলা ছেড়ে দিলেন এবং কাজে যোগ দিলেন। এরপর পরিবারের মস্ত লড়াই। বাবা
সারারাত অটো চালিয়ে টাকা জোগাড় করে ক্রিকেট সরঞ্জাম কিনে দেন সিরাজকে।
এরপর হায়দরাবাদ রাজ্য দলে সুযোগ এল। সেখান থেকে IPL। এই IPL খেলে সিরাজ
কয়েক কোটি টাকা রোজগার করে বাবার হাতে তুলে দেন সিংহভাগ আর নিজের খরচ
রাখেন যা দিয়ে জুতো জামা ইত্যাদি কিনে একটু ভদ্রস্থ হতে পারেন। অবশেষে
অস্ট্রেলিয়াগামী দলে সুযোগ জুটল এবার। দুবাই থেকে সোজা সিডনি। হঠাৎই
দুঃসংবাদ, বাবা মারা গেছেন। খবরটি তাঁকে শোনান রবি শাস্ত্রী, বলেন দেশে
ফিরতে চাও ? বেদনাহত সিরাজ জানান, তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ভারতের
ক্যাপ মাথায় মাঠে দেখার সুতরাং যাওয়া হবে না। খেললেন মেলবোর্ন টেস্ট এবং ৫
উইকেট নিয়ে নজির গড়লেন ভারতের গর্ব করা উদাহরণ সৃষ্টি করা "মহম্মদ
সিরাজ।।"
Post a Comment
Thank You for your important feedback