কাজ নেই ‘পরিযায়ী শ্রমিক’ বাবাদের, তাই সাইকেলে বিস্কুট ফেরি খুদেদের


শিশুশ্রম বন্ধ করে সবাইকে শিক্ষার সুযোগ দিতে নানা প্রকল্প রয়েছে সরকারের। কিন্তু পেটের টান বড় বালাই। করোনা আবহে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল।আর লকডাউনের জেরে রোজগার বন্ধ থাকায় সংসারে অর্থকষ্ট লেগেই আছে। তাই অভাবের সংসারে কিছু অর্থের যোগান দিতে বিস্কুট বিক্রির পথ বেছে নিয়েছে ওরা। মুর্শিদাবাদের জেলার সাগরদিঘি ব্লকের পাটকেলডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের পালোয়ানপাড়া গ্রামের বহু শিশুই এখন বই-খাতা ফেলে সাইকেল নিয়ে গ্রামে-গ্রামে বিস্কুট বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ পঞ্চম আবার কেউ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।


 


কিন্তু পড়াশুনো ছেড়ে হঠাৎ এই পথ কেন? ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের কথায়, গরিবের সংসার। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ, কিছুদিন আগেই ফের বাইরে কাজ করতে গেছেন তাদের বাবা। তবে এখনও সংসার ঠিকভাবে চলছে না, তাই বাধ্য হয়ে এই পথ বেছে নিতে হয়েছে।


রাজীব শেখ নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, "কিছুদিন আগে বাবা মেদিনীপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গেছেন। বাড়িতে খুব অভাব। এখন তো মাদ্রাসা বন্ধ। তাই আমি এখন মণিগ্রাম থেকে বিস্কুট কিনে নিয়ে এসে কাবিলপুর, মথুরাপুর, গৌরপুরে বিস্কুট বিক্রি করছি।" একই সুর বাকিদের গলাতেও। বিস্কুট বিক্রি করে কোনও দিন ১০০ টাকা, আবার কখনও দিনে ২০০ টাকা রোজগার হয়। সেই টাকা তারা তুলে দেয় মায়েদের হাতে।


 

 
কিন্তু শিশুশ্রমের মর্মান্তিক এই চিত্র শুধু সাগরদিঘি এলাকাই নয়, বরং পুরো মুর্শিদাবাদ জেলাতেই চোখে পড়ছে। শুধু তাই নয়, বহু শিশু আবার কাজ করার জন্য ভিন রাজ্যেও চলে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, করোনার জন্য এখন স্কুল-মাদ্রাসা বন্ধ। কিন্তু স্কুল খুললেই সামনে আসবে আসল চিত্র। তাঁদের মতে, স্কুলছুট শিশুর সংখ্যা মুর্শিদাবাদ জেলায় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post