শুভেন্দুর গড়ে তৃণমূলের সভা, নেই অধিকারী পরিবারের কেউই



তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার তাঁর খাসতালুকেই শক্তি পরীক্ষায় নেমেছিল তৃণমূল। এদিন কাঁথিতে প্রথমে মিছিল এবং পরে জনসভা করেন তৃণমূল নেতারা। তবে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হল এদিন তৃণমূলের গোটা কর্মসূচিতেই অনুপস্থিত ছিলেন অধিকারী পরিবার। তবুও শাসকদলের নেতারা জনসভা থেকে বার্তা দিলেন, শুভেন্দু দল ছাড়লেও তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হয়নি, হবেও না। সবমিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গেল। 


মঙ্গলবারই শিশির অধিকারী জানিয়েছিলেন, তিনি অসুস্থ তাই তিনি কাঁথির জনসভায় যেতে পারবেন না। কিন্তু তাঁর অপর দুই ছেলের অনুপস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠে গেল। উল্লেখ্য, শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু তমলুকের তৃণমূল সাংসদ এবং অপর ভাই সৌম্যেন্দু কাঁথি পুরসভার প্রশাসক। ফলে অধিকারী পরিবারকে বাদ দিয়ে মেদিনীপুরের রাজনৈতিক চিত্র অনেকটাই বেমানান। তবে আজ কাঁথিতে সৌগত রায় ও ফিরহাদ হাকিমের সভায় বিপুল লোক এনে শক্তিপরীক্ষায় চমক দেখাল তৃণমূল কংগ্রেস। 

এদিন কাঁথির তৃণমূলের কর্মসূচিতে শাসকদলের দুই শীর্ষনেতা ফিরহাদ হাকিম এবং সৌগত রায় উপস্থিত ছিলেন। দুজনেই নিজের বক্তব্যে তীব্র আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। এমনকি সৌগত রায় এবং ফিরহাদ হাকিম দলত্যাগী নেতাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলতেও ছাড়েননি। সৌগত রায় বলেন, দিঘার সমুদ্র থেকে যেমন দু’কলসি জল নিলে কিছু যায় আসে না, তেমন তৃণমূল থেকে কেউ গেলে তৃণমূলের কিছু যাবে-আসবে না। আরও সুর চড়িয়ে তিনি শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘লজ্জা লাগে তোমাকে আমার সহকর্মী বলতে। যে সরকারের বিরুদ্ধে গোটা দেশের কৃষকরা আন্দোলন করছে। সেখানেই যোগ দিল তুমি?’ এমনকি পরিবারতন্ত্র নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন প্রবীন এই তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়, শিশির অধিকারীর ছেলে না হলে শুভেন্দুকে কেউ চিনতেন না। কলকাতার মুখ্য প্রশাসক তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক। তিনি সরাসরি শুভেন্দুর নাম নিয়ে বলেন, ‘মানুষ সিরাজকে মনে রেখেছে। মীরজাফরকে কেউ মনে রাখে না। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য শুভেন্দুকেও কেউ মনে রাখবে না। শুভেন্দু আজ মীরজাফরদের দলে। এটাই খুবই দুঃখের’। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও খ্যাপা ষাঁড়ের সঙ্গে তুলনা করতে ছাড়েন নি ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ রোজ সকালবেলা ওঠেন আর এক এক জনকে গুঁতিয়ে দেন। উনি ক্ষ্যাপা ষাঁড়ের মতো’। অধিকারী পরিবারের সদস্যদের ছাড়াই এদিন বড় মিছিল এবং জনসভা করে পাল্টা হুঙ্কার দিয়ে তৃণমূল বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল যে তাঁরাও রাজনীতির ময়দানে তাঁরাও কম যায়না। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post