বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে মৃত্যু বিজেপি কর্মীর, ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক


সকাল থেকেই পরিস্থিতি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত বিজেপি যুব মোর্চার উত্তরকন্যা অভিযানে ধুন্ধুমার বাঁধলো শিলিগুড়িতে। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিলিগুড়ির তিনবাতি মোড় ও জলপাই এলাকা। বিজেপি নেতা-কর্মীদের আটকাতে জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড করেছিল পুলিশ। সোমবার দুপুরে বিজেপি যুব মোর্চার একটি মিছিল তিনবাতি মোড়ে পৌঁছাতেই শুরু হয় ধুন্ধুমার। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন বিজেপির যুব কর্মীরা। পুলিশও পাল্টা জলকামান দিয়ে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসও।  সূত্রের খবর, পুলিশের লাঠির ঘাঁয়ে এক উলেন রায় (৫০) নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশের তরফে এই দাবির সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। 

বিজেপির দাবি, ওই কর্মীর বাড়ি গাজোলডোবায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় এক হাসপাতালে পাঠানো হলে কিছুক্ষণ পরই মৃত্যু হয় উলেন রায় নামে ওই কর্মীর। তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এছাড়া আহত হয়েছেন অনেকে, এমনকি সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশের ইট ও লাঠিতে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ ডেকেছে।

 দিলীপ ঘোষ বলেন পুলিশের লাঠির ঘায়ে আমাদের উলেন রায় নামে গজলডোবার বাসিন্দা এক কর্মীর মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল। তাঁর দেহেও চোট লেগেছিল। মিলেছে রবার বুলেটের ক্ষতও। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখনই খবর এসেছে যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে'।

 

অপর একটি মিছিল জলপাই এলাকায় এলে পুলিশ বাঁধা দেয়। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় তাঁরা। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য। সূত্রের খবর, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় কিছুটা আহত হয়েছেন। পরে তিনি বলেন,  শান্তিপূর্ণভাবে অভিযান করছিলেন বিজেপি সমর্থকরা। পুলিশ তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। অরাজকতা চালাচ্ছে মমতা সরকার। এই মিছিল আটকাতে ঘনঘন কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাঁটায় পুলিশ। অপরদিকে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, সৌমিত্র খাঁ আহত হয়েছেন। কাঁদানে গ্যাসের সংস্পর্শে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও।


বিজেপির অভিযোগ, নবান্ন অভিযানের মতো উত্তরকন্যা অভিযানে জলকামান থেকে বেগুনি রঙের পরিবর্তে গোলাপি জল ছেটানো হয়েছে। জলকামান দিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করার মাঝেই ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে থাকে তাঁরা। পুলিশও মাইকে বারবার মিছিলকারীদের পিছিয়ে যেতে নির্দেশ দিতে থাকে। এই আবহেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর আরও দাবি, মহিলা মোর্চার সদস্যদেরও আক্রমণ করেছে পুলিশ। এমনকি তিনি দাবি করেছেন, ফের রাসায়নিক মেশানো জল ছেটানো হয়েছে তাঁদের দিকে।

অপরদিকে জলপাই মোড়ে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র মিছিলও আটকায় পুলিশ। মূহূর্তে সেখানেও বেঁধে যায় ধুন্ধুমার। জানা গিয়েছে পুলিশের তৈরি বাঁশের ব্যারিকেডে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়েছেন। কোনও কোনও এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির খবরও পাওয়া গিয়েছে। 


দুই তরফেও বহু আহত হয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এরমধ্যেই টুইট করে তোপ দাগেন রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। পরে তিনি বলেন, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ের মতো নেতাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো যাবে না। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post