কোনও রেল স্টেশনে ঢুকে ডিসপ্লে বোর্ডে যদি দেখা যায় ট্রেনের দেরি আছে, তাহলে যাত্রীরা পড়েন মহা ফাঁপরে। ট্রেন না ছাড়ার সময় পর্যন্ত কী করবেন সেটা নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। দীর্ঘদিন লকডাউনের সময় বন্ধ ছিল ট্রেন পরিষেবা। এই সময় হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন না রেল কর্তারা। লকডাউনের মধ্যেই চলেছে বিভিন্ন স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ। ফলে ভোল বদলেছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনের।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিমানবন্দরের মতোই আধুনিক পরিষেবা চালু করা হয়েছে স্টেশনগুলিতে। নিউ নর্মালে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্টেশনে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক ওয়েটিং লাউঞ্জ থেকে শুরু করে উন্নত মানের ফুডকোর্ট। আবার কোনও স্টেশনে চালু হয়েছে ট্রেন-রেস্তরাঁ। এবার কলকাতা স্টেশনেও চালু হয়ে গেল বিশ্বমানের ওয়েটিং লাউঞ্জ।
শিয়ালদার অদূরে পূর্ব রেলের অধীনে কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়ে বহু দূরপাল্লার ট্রেন। আবার ঢাকা ও খুলনাগামী দুটি আন্তর্জাতিক ট্রেনও এই স্টেশন থেকে চলাচল করে। ফলে অনেক যাত্রীই কিছুটা সময় হাতে নিয়ে স্টেশনে আসেন ট্রেন ধরার জন্য। আবার অনেক সময় ট্রেন ছাড়তেও দেরি হয়। ফলে যাত্রীদের সমস্যা হয় এই সময়টা কি করবেন এটা ভেবে। এবার কোনও চিন্তা নেই। স্টেশনেই চালু হয়ে গেল প্রিমিয়াম ওয়েটিং লাউঞ্জ।
কলকাতা স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ২০০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই প্রিমিয়াম লাউঞ্জ। সরকারী ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে (পিপিপি মডেল) তৈরি করা হয়েছে এই লাউঞ্জটি। এখানে থাকছে রিক্লাইনার, সেলুন, স্পা এমনকি গেমিং জোনও। এছাড়াও থাকছে যাত্রীদের জন্য চা-কফি ও হালকা খাবারের জন্য ফুডকোর্ট।
পূর্ব রেলের কর্তাদের কথায়, কলকাতা স্টেশনে আসা দেশ ও বিজেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যাত্রীরা এই লাউঞ্জের সুবিধা নিতে পারবেন। খরচও খুব সামান্য, মধ্যবিত্তের হাতের নাগালেই রাখা হয়েছে। এই প্রিমিয়াম লাউঞ্জে মাথাপিছু প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা প্রতি ঘন্টা। সেলুন, স্পা, গেমিং জোনের জন্য অন্যান্য পরিষেবা নিতে হলে গুনতে হবে বাড়তি কড়ি। উল্লেখ্য, শিয়ালদা স্টেশনে ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে এই ধরনের প্রিমিয়াম ওয়েটিং লাউঞ্জ। সেখানে রয়েছে এসি ডরমেটরি, টু-বেড, ফোর-বেড এবং এসি সুইট। ১২ এবং ২৪ ঘন্টার জন্য ঘরগুলির ভাড়া ৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা। শিয়ালদা স্টেশনের মূল ফটক দিয়ে ঢুকেই দোতলায় পাঁচতারা বন্দোবস্ত। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার প্ল্যাটফর্মের কাছে একটি শপিংমল তৈরি হচ্ছে। সেখানে নামী-দামী সংস্থার রেস্তরাঁও থাকবে। সবমিলিয়ে রেলযাত্রীদের বিমানবন্দরের মতো সুবিধা দিতে চায় নরেন্দ্র মোদির সরকার।
Post a Comment
Thank You for your important feedback