বিজেপি যোগ্য লোককে যোগ্য জায়গা দেয় না, এই অভিযোগ তুলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলেই ফিরে গেলেন সুজাতা খাঁ। তিনি বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী। যিনি গত লোকসভা নির্বাচনে স্বামীর হয়ে একাই চষে বেড়িয়েছিলেন গোটা এলাকা। লোকসভায় প্রার্থী হলেও আদালতের নির্দেশে বিষ্ণুপুরে ঢুকতে পারেননি সৌমিত্র। তাঁর হয়ে সুজাতা একা হাতেই প্রচার সামলেছিলেন। জিতিয়েও এনেছিলেন স্বামীকে। সেই সুজাতাই আচমকা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বাংলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোমবার তৃণমূল ভবনে সৌগত রায়, কুনাল ঘোষের হাত থেকে ঘাষফুলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েই তোপ দাগলেন পুরোনো দলের বিরুদ্ধে। সুজাতার অভিযোগ, শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর বাড়ি ভাঙচুর হয়। এমনকি শুভেন্দু অধিকারীকে দুষে বলেন, ‘শুভেন্দু সুযোগসন্ধানী। আমি ওঁকে নেতা বলে মনেই করি না। দশ বছর তৃণমূল সরকারে থেকে সেখান থেকে সব সুবিধা নিয়ে এখন বিজেপিতে গেলেন’।
এরপরই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘বিজেপিতে যোগ্য লোকেরা সম্মান পান না। অন্য দল থেকে এসেই দলে উঁচু পদ পেয়ে যাচ্ছেন অনেকে, কিন্তু আমি শুধু লড়াই চালিয়ে গেছি, সম্মান পাইনি কোনওদিন। তাই যোগ্য দলে প্রিয় নেত্রীর সঙ্গে কাজ করতে চাই’। তৃণমূলে ফিরে এসে তাই তিনি প্রাণ ভরে ‘নিঃশ্বাস’ নিতে পারলেন বলেও দাবি করলেন সুজাতা খাঁ। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁর স্বামীও কি তৃণমূলে আসতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়ে দেন, ‘সেটা হতেও পারে’। বিজেপি সম্পর্কে এদিন বারবার তীব্র ক্ষোভ ঝড়ে পড়েছে সুজাতার গলায়। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন সেটা নিয়েও বিষাদগার করলেন এদিন। তাঁর দাবি, ‘বিজেপিতে ৬ জন আছেন মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায়, ১৩ জন রয়েছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায়। তাই প্রকৃত মুখ না থাকায় আমাদের বারবার প্রধানমন্ত্রীকেই দেখাতে হয়েছে’। সবমিলিয়ে তাঁর কথায় বোঝা গেল, শুভেন্দুর দলে যোগ দেওয়া তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই বিজেপি ছেড়ে পুরোনো দলেই ফিরে এলেন। আবার বিভিন্ন মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল কয়েকটি ইস্যুতে সৌমিত্র খাঁ-র সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না সুজাতার। এমনকি রাজনৈতিক মতামতেও স্বামীর সঙ্গে মতান্তর হচ্ছিল। তাই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। পুরো বিষয়ে এখনও সৌমিত্র খাঁ এবং বিজেপি নেতাদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Post a Comment
Thank You for your important feedback