'হতেম যদি একদিনের রাজা'- না রাজপাট না পেলেও রাজার হালে কিন্তু একরাত কাটাতেই পারেন রাজবাড়িতে। কলকাতা থেকে মাত্র ৩৫ কিমি দূরেই রয়েছে ২৫০ বছরের পুরোনো বাওয়ালি রাজবাড়ি। সম্প্রতি netflix- এর 'বুলবুল' সিনেমার দৌলতে অনেকের কাছেই পরিচিত এই বাওয়ালি রাজবাড়ি। তবে এই ভগ্নপ্রায় রাজবাড়ি সংস্কার করে তা এখন বিলাসবহুল হেরিটেজ হোটেল। ডে-আউট করার পাশাপাশি প্রিয়জনকে নিয়ে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। তবে আগে থেকে রাজবাড়ির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বুকিং করে আসতে হবে দু'ক্ষেত্রেই।
রাজবাড়িতে প্রবেশদ্বারে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে শাঁখ বাজিয়ে উলুধ্বনি করে আপ্যায়ণ করা হয় অথিতিদের। ভিতরের পরিবেশ বেশ ছিমছাম। ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া রয়েছে আনাচে-কানাচে। লম্বা বারান্দায় রয়েছে ইতালিয়ান মার্বেলের কারুকার্য।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, প্রায় ৪০০ বছর আগে মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে স্থানীয় কৃষক বিদ্রোহ দমন করার পুরস্কার হিসেবে প্রায় তিন লক্ষ একর জমি পেয়েছিলেন দক্ষিণবঙ্গের মনসবদার শোভারাম সিং। সেই অঞ্চলের মধ্যে পরেছিল বজবজ সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। কালক্রমে এই অঞ্চলের ক্ষমতা আসে স্থানীয় মণ্ডল রাজাদের হাতে, তাঁদের আমলেই তৈরি হয় এই বাওয়ালি রাজবাড়ি।
কী কী দেখবেন :
রাজবাড়ি থেকে কিছটা দূরেই রয়েছে নবরত্ন গোপীনাথ মন্দির। কথিত আছে বাওয়ালির এই মন্দিরের কারুকার্য দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে দক্ষিণেশ্বরের মন্দির তৈরি করেছিলেন রানি রাসমণি। এছাড়া হুগলি নদীর পাশেই রয়েছে ব্রিটিশ আমলের বারুদ ঘর। রাজবাড়ি থেকে ৬ কিমি দূরে রয়েছে বড় কাছারির মন্দির। এছাড়া রাজবাড়ির ভিতরের প্রশস্ত ঘর, antique আসবাবপত্র, সুন্দর সাজানো বাগান দেখতে দেখতেই কেটে যাবে বেশ কিছু সময়। রাজবাড়ির পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় একটি ছোট walk-এর আয়োজন করা হয় রাজবাড়ি ও তার ইতিহাস অতিথিদের সামনে তুলে ধরতে।
কীভাবে যাবেন :
কলকাতা থেকে মাত্র ঘন্টা দু'য়েকের রাস্তা। সড়কপথে নিজের গাড়িতে তারাতলা-বাকড়াহাট কিংবা ঠাকুরপুকুর হয়ে যাওয়া যায় বাওয়ালিতে। এছাড়া কলকাতা থেকে SD76 বাসেও আসতে পারেন এখানে। এছাড়া রেলপথে শিয়ালদহ থেকে প্রথমে পৌঁছতে হবে বজবজ স্টেশন। স্টেশনের বাইরেই রাজবাড়ি পৌঁছনোর জন্য পেয়ে যাবেন অটো।
Post a Comment
Thank You for your important feedback