স্বামী হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি, স্বাভাবিক চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন স্ত্রীও। বয়সের ভারে ন্যুব্জ শরীর। প্রচণ্ড ঠান্ডায় ভাঙা কুটিরের মেঝেতেই কোনওমতে দিন গুজরান রায়গঞ্জ ব্লকের বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা রামপ্রসাদ বর্মন ও তার স্ত্রী বীনা বর্মন। জোটেনি কোনও সরকারি সাহায্য। পাড়াপ্রতিবেশী ও আত্মীয়দের দেওয়া নুন ভাত খেয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে বৃদ্ধ বর্মন দম্পতির।
প্রায় দু'দশক আগে চোখের সমস্যা ধরা পরে বাসমানা গ্রামের বাসিন্দা রামপ্রসাদ বর্মনের। কিন্তু অর্থাভাবে সঠিক চিকিৎসা করাতে না পারায় একসময় দুটি চোখই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে স্ত্রী বীণা বর্মনের শরীরেও বাসা বেঁধেছে নানা অসুখ। বর্তমানে চলাফেরার শক্তিটুকুও হারিয়েছেন তিনি। দুজনেই অসুস্থ, ফলে উপার্জনের সব রাস্তাই বন্ধ। এই শীতেও ভাঙা ঘরের মধ্যে খড় বিছিয়ে চরম আর্থিক অনটনে দিন কাটাচ্ছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি।
রামপ্রসাদবাবু বলেন, দৃষ্টিশক্তি নেই। শারীরিক সমস্যার জন্য আমরা বর-বউ কেউ কাজ করতে পারিনা তাই রোজগারের পথ বন্ধ। আত্মীয় আর পাড়াপ্রতিবেশীরা যতটুকু খাওয়ার দেয় তাই খেয়েই বেঁচে আছি। কোনও সরকারি সাহায্য পাই নি। প্রতিবেশীদের মুখেও একই অভিযোগ। তাঁরা জানান, অসহায় এই বৃদ্ধ দম্পতির পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। কেউ সাহায্য করে না।
অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির বিষয়টি সামনে আসতেই সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, ভোটের আগেই রাজ্যসরকার দুয়ারে সরকার কর্মসুচী নিয়েছে। আগে তো নয়ই, ওই পরিবার এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি সাহায্য পাননি।
বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মীনা বর্মন জানান, ওই বৃদ্ধ দম্পতি তাঁর কাছে এসেছিলেন। তখন তাঁদের খাওয়ার জন্য ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় ওনারা কোনও ভাতা পান না। তিনি আশ্বাস দেন, কয়েকদিনের মধ্যেই দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শিবির রয়েছে এলাকায়। সেখান থেকেই সরকারের তরফে ওই বৃদ্ধ দম্পতি যাতে ভাতা পান তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
Post a Comment
Thank You for your important feedback