বর্ষশেষের রাতে বেপরোয়া শহরবাসী

করোনার দাপট, তাই বলে ঘরে বসে থাকল না কলকাতা। তবে প্রত্যেক বছরের ভিড়ের চেনা ছবি কিছুটা ম্লান হলেও নজরে এল কিছু মানুষের বেপরোয়া মনোভাবও। জনসমাগম যাতে বেশি না হয় তার জন্য রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনকে আগেই সতর্ক করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতি এখনও বদলায় নি। তাই বর্ষশেষের রাতে শহরের কোথাও যাতে ভিড় না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই। আদালতের নির্দেশ মত, পুলিশ-প্রশাসন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করলেও মানুষের মধ্যে সচেতনার অভাব দেখা গেল অনেকটাই। 

বর্ষশেষের দিনে চিড়িয়াখানা সহ রাতে পার্কস্ট্রিটের রাস্তায়, ইকোপার্কে বাঁধনছাড়া উচ্ছ্বাসে গা ভাসালেন শহরবাসী। পুলিশের তৎপরতা কিছুটা নজরে থাকলেও  দূরত্ব-বিধি পালন বা মাস্কের ব্যবহারই শিকেয় উঠল উৎসবের রাতে। কাউকে কাউকে তো বলতেও শোনা গেল, বছরের শেষ দিনে কোনও বিধিনিষেধ নেই। আজ  পার্টি। এসবের মাস্কের কোনও প্রয়োজন নেই। 

পুলিশ সূত্রে খবর, নিউ ইয়ার ইভের রাতের ভিড় টেক্কা দিয়েছে বড়দিনের ভিড়কেও। রাত বাড়তেই পার্ক থেকে শুরু করে রেঁস্তোরা-বার গুলিতে উপচে পড়েছে ভিড়। পার্ক স্ট্রিট, ময়দান, ভিক্টোরিয়া ও নিউ টাউনের রাস্তায় এত লোকজনের ভিড়ে অনেককেই দেখা গেছে মাস্ক ছাড়াই ঘুরতে। অনেকেই আবার রাস্তায় মাস্ক খুলেই নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত। সঙ্গে আবার ব্যঙ্গক্তি, মাস্ক না পরলে আবার মিডিয়া কথা শোনাতে চলে আসবে। ছবি উঠে যাবে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, নাইট  কার্ফু জারি না করলে মানুষ বেরোবেই। সরকারের উচিত ছিল কড়া নির্দেশিকা জারি করার। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে মানুষকে বোঝালে পুলিশের নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? দূর থেকেই মাস্ক দিয়ে, মানুষকে সতর্ক করছি। প্রসঙ্গত, বর্ষশেষের রাতের এই বেপরোয়া চিত্র প্রশ্ন তুলে দিয়েছে প্রশাসনের সদিচ্ছার ওপরই। 


এদিকে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে কাশিপুর উদ্যানবাটী। কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে বিপুল জনসমাগম এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত, একই পথে হেঁটেছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষও। মাঝরাত থেকেই ভক্তদের লাইন পড়ে যায়  মা ভবতারিণীর পুজো দেওয়ার জন্য। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে মন্দিরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, সকলকে স্যানিটাইজ করে ঢোকানো সম্ভব নয়। তাই এই এবছর ১ জানুয়ারি মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতোই মা ভবতারিণীর পুজো ও হোম হবে।                


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post