দু’দিনের বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তিনিই। কিন্তু সকলের কৌতুহল ছিল তিনি মতুয়া মহাসংঙ্ঘের মহাতীর্থ ওড়াকান্দিতে যান কিনা। সফরের দ্বিতীয় দিনেই তিনি পৌঁছে গেলেন ওড়াকান্দিতে। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মভিটেতে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য শান্তুনু ঠাকুর। শনিবার সকাল থেকেই ছিল তাঁর ঠাসা কর্মসূচি। সকালে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পুজো দেন তিনি। এরপর বঙ্গবন্ধু মুজিবরের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় যান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে ২০ কিলোমিটার দূরে কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি পৌঁছন মোদি।
সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উলু ও শঙ্খধ্বনি দিয়ে এবং ডঙ্কা ও কাঁসা বাজিয়ে স্বাগত জানান মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা। মন্দির এবং আশ্রমের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। এরপর মতুয়াদের তীর্থপীঠ শ্রীধাম হরিচাঁদ মন্দিরে পুজো দিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। মোদি বলেন, ‘ওড়াকান্দির এই পবিত্র ভূমি ভারত ও বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থক্ষেত্র’। তিনি আরও বলেন, ‘অনেক বছর ধরে এই পবিত্র দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১৫ সালে যখন বাংলাদেশ এসেছিলাম, তখনই এখানে আসতে চেয়েছিলাম। আজ সেই ইচ্ছা পূর্ণ হল। ভারতে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মতুয়া ভাইবোনেরা ওড়াকান্দিতে এসে যেমনটা অনুভব করেন, আমিও তেমনই অনুভব করছি’।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে বেশ কয়েকটি আসনে মতুয়াদের ভোট নির্নায়ক ভূমিকা নেয়। ভোটের মধ্যেই মোদির এই মতুয়া মহাতীর্থে যাওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বাংলার রাজনৈতিক মহল। রাজ্যের ৮০টির বেশি বিধানসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট প্রায় ১৩ লাখের বেশি। এই কথা মাথায় রেখেই বাংলায় ভোটগ্রহণ চলাকালীন সুকৌশলে মোদি মতুয়া ঠাকুর বাড়ির অন্যতম সদস্যকে সঙ্গে নিয়েই ওড়াকান্দিতে গেলেন। তিনি সেখানে নিজের ভাষণে ঠাকুরনগরের প্রসঙ্গ তুলেও বলেন, ‘বড়মার স্নেহ, মায়ের মতো আশীর্বাদ, আমার জীবনে একটা অমূল্য সময় ছিল’। জানা যাচ্ছে, ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে জরুরি ভিত্তিতে চারটি হেলিপ্যাড, ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরে ৫০০ মিটার সড়ক এবং ওড়াকান্দিতে প্রবেশের জন্য ৬০০ মিটার পাকা সড়ক সংস্কার করা হয়েছে।
Post a Comment
Thank You for your important feedback