ব্রিটিশ আমলে তৈরি রেলের ভবনটির অবস্থান কলকাতার কেদ্রস্থলে। বহু পুরাতন এই বহুতলটি প্রায় হেরিটেজে পরিণত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রেলের ওই নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়েই ভায়াবহ আগুন লাগে। দমকল কর্মীরা রাতভর লড়াই চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন ভোর চারটে নাগাদ। সোমবার কার্যত সারারাতই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৌড়াদৌড়ি করেছেন একবার অকুস্থল একবার হাসপাতাল। তিনি একসময় রেলমন্ত্রী ছিলেন কাজেই তিনি জানেন এই স্ট্যান্ড রোডের বাড়িটি বহু পুরোনো। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই রেলের অসহযোগীতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি, আগুন লাগার পর ওই বিল্ডিংয়ের একটি ম্যাপ চেয়েও পাওয়া যায়নি। যার জেরে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে বেগ পেতে হয়েছে দমকল কর্মী আধিকারিকদের।
Officers of railways were present there, efforts were being made for whatever was required. Maybe any map wasn't made available immediately, staff members of railways were present to guide about the building: Manoj Joshi, General Manager Eastern Railway #kolkatafire pic.twitter.com/htJ7xx9YC9
— ANI (@ANI) March 8, 2021
পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন, ঘটনাস্থলে রেলের কোনও আধিকারিক ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মর্মান্তিক ও ভয়াবহ দুর্ঘটনা, খুবই দুঃখজনক। রেল আলাদা তদন্ত করলেও কলকাতা পুলিশও তদন্ত করবে। মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর একটি দাবি মেনে নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এদিন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, ‘গতকাল ঘটনাস্থলে রেলের আধিকারিকরা ছিলেন। সেই মুহূর্তে হয়তো মানচিত্র পাওয়া যায়নি। কিন্তু রেলের কর্মী যাঁরা ছিলেন ভবনের কোথায় কী রয়েছে, তাঁরাই সে বিষয়ে উদ্ধারকারীদের সহযোগিতা করেছেন’। অর্থাৎ রেলের দাবি, রেলের আধিকারিকরা দমকল এবং পুলিশকে সহযোগীতা করেছেন। রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল সবরকম সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন। কিন্তু এখনও বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া বাকি। কেন আগুন এত ভয়াবহ রূপ নিল? আগুন কোন তলায় প্রথম লাগে বা ঠিক কোন দফতরে আগুন লাগে? কেন ম্যাপ পাওয়া গেল না? কেনই বা নির্দিষ্ট সুরক্ষাবর্ম ছাড়াই দমকলকর্মীরা লিফট ব্যবহার করেছিলেন আগুন লাগার পরও? তাঁরা প্রশিক্ষিত হওয়ার পরও কেন এই ভুল করলেন? মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের প্রতি আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেও এই প্রশ্ন তুলেছেন।
ইতিমধ্যেই আগুন লাগার ঘটনাতেও রাজনীতির রঙ লেগেছে। মঙ্গলবার সকালেই বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত এবং সর্বাভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় ঘটনাস্থলে যান। তাঁরাও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রেল কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকমিটি গঠন করেছে।
ছবি সৌজন্য এএনআই টুইটার...
Post a Comment
Thank You for your important feedback