বেহালা পূর্বের বিধায়ক ছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা তৃণমূল জমানার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর একদা ঘনিষ্ঠ ‘কানন’ আজ বিজেপিতে। ফলে ওই কেন্দ্রে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কেই টিকিট দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ফলে রাজনৈতিক মহলের আশা ছিল বেহালা পূর্বে স্বামী-স্ত্রীর লড়াই দেখা যাবে ভোটের ময়দানে। কিন্তু বিজেপি তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় দলীয় প্রার্থীদের একটা তালিকা প্রকাশ করার পর দেখা গেল অনেক চমক রয়েছে। এরমধ্যে বেহালা পূর্ব বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী হলেন টলিউডের অভিনেত্রী পায়েল সরকার। ফলে রত্নার বিরুদ্ধে তাঁর স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আর টিকিট দেয়নি দল। তাঁকে পাশের কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে টিকিট দেওয়া হয়। আর এটা মেনে নিতে না পেরে বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে বিজেপির সঙ্গই ত্যাগ করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফলে এই বেহালা পুর্বে এবার তৃণমূলের রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি বিজেপির পায়েল সরকার। আর টিকিট পাওয়ার পরই পায়েলের মন্তব্য, আমি ভোটে জিতলে অন্যান্যদের মতো উধাও হয়ে যাব না। এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে থাকব। অপরদিকে বেহালা পূর্বে শমিতা হর চৌধুরীকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। তিনিও নেমে পড়েছেন প্রচারের ময়দানে। তবে রাজনৈতিক মহলে চর্চা এখন রত্না এবং পায়েলের লড়াই নিয়েই।
এমনিতেই কলকাতা জোনে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই দুর্বল বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। বিজেপি নেতৃত্বও এটা জানে। তাই পোড় খাওয়া রাজনৈতিক তথা সংগঠক শোভন চট্টোপাধ্যায়কেই কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তিনি কাজও শুরু করেছিলেন। নিয়মিত যেতেনও হেস্টিংসের নতুন নির্বাচনী কার্যালয়ে। কিন্তু কলকাতার আসনগুলিতে পদ্ম ফোটানোর আগেই দলত্যাগ করলেন সেনাপতি। ফলে অনেকটাই চাপে পড়ল পদ্ম শিবির।
যদিও এই মুহূর্তে বেহালা পূর্ব বিধানসভা আসনটি তারকা কেন্দ্র হিসেবেই উঠে এসেছে। টলিউডের পরিচিত মুখ, পায়েল সরকার এই কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে তৎকালীন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় ২৪,২৯৪ ভোটে হারিয়েছিলেন বাম-কং জোট সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে। ফলে এই আসনটি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি সেটা বলাই বাহুল্য। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে বিজেপি অনেকটাই ভোট টানতে সমর্থ হয়। লোকসভা ভোটের নীরিখে বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় পেয়েছিলেন ৮৯,৩৪১ ভোট আর বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু পেয়েছিলেন ৭৩,৪৮৩ ভোট। সেখানে বাম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন মাত্র ৩২,৭৯৪ ভোট। এখন দেখার বিজেপির সিনে তারকা প্রার্থী বেহালা পূর্ব থেকে জিতে রাজনৈতিক তারকা হয়ে উঠতে পারেন কিনা। এখানে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ কিন্তু শোভনই।
Post a Comment
Thank You for your important feedback