স্বাধীনতা উত্তর যুগে দমদম এলাকায় লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু মানুষকে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান রায়। এলাকার পর এলাকাতে কলোনি সংস্কৃতি এসে পরে দমদমে। নামমাত্র মূল্যে ওপার বাংলার মানুষকে জমিও দেওয়া হয়। তখন এই এলাকায় আসলে দেখা যেত কোনও ক্রমে একটি কাঠামোর উপর টিনের চাল দেওয়া সার সার বাড়ি। দমদম এলাকাটিও বেশ বড়। দক্ষিণের পাতিপুকুর থেকে উত্তরের বিরাটি অবধি। যদিও প্রাথমিক ভাবে জনসংখ্যা নেহাত কম নয়। ১৯৭১ এর বাংলাদেশ হওয়ার সময় জনসংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। এখন ওই দমদম ভেঙে তিনটি বিধানসভা হয়েছে | দমদম, বিধাননগর ও উত্তর দমদম। এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব দমদম বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে।
স্বাধীনতার পর ১৯৫১ সালে কংগ্রেসের কানাইলাল দাস জিতে আসেন এই বিধানসভায়। তারপর ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে পিএসসি প্রার্থী পবিত্রমোহন রায় কংগ্রেসকে হারিয়ে জেতেন। এরপর ৬২ থেকে টানা ১০ বছর দমদম বিধানসভা দখলে রাখে সিপিএম। ৭২-এ শোনা যায় বুথ দখল করে ক্ষমতা পায় কংগ্রেস। ফের ৭৭ থেকে ২০০১ ক্ষমতায় ফেরে সিপিএম। ২০০১ সালে রাজ্যে পরিবর্তন হয়। পরিবর্তনের বছর অর্থাৎ ২০১১ বিধানসভা নির্বাচন থেকে দমদমের বিধায়ক তৃণমূলের ব্রাত্য বসু। প্রথমবার ব্রাত্য জেতেন ৩১,৪৯৪ ভোটে। সেবার সিপিএমের মন্ত্রী গৌতম দেবকে হারান তিনি। পরের ভোট অর্থাৎ ২০১৬ সালে তৃণমূলের ভোটে অনেকটাই কমে যায়। ব্রাত্য পান ৮১,৫৭৯ ভোট এবং সিপিএমের পলাশ দাস পান ৭২,২৬৩ ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এই কেন্দ্রে শাসকদলের প্রভাব এতটুকু কমেনি।
লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় দমদম থেকে ভোট পেয়েছিলেন ৭৬,৫২৬ ভোট এবং বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য পান ৭১,৪১৪ ভোট। অপরদিকে সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্যের ভোট অনেকটাই কমে, তিনি পেয়েছিলেন ২২,৬০০ ভোট। ফলে এবারের ভোটেও তৃণমূলের মূল লড়াই বিজেপির সঙ্গে। এবারেও তৃণমূলের প্রার্থী ব্রাত্য বসু। কিন্তু বিজেপির প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে দমদমে তাঁদের সংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু একই সাথে এটাও বাস্তব, একুশের ভোটে বামেরা তাদের ভোট শতাংশ বাড়াবার চেষ্টা করবে। সবমিলিয়ে এবার বিধানসভা নির্বাচনে দমদম বিধানসভা কেন্দ্র আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়েই থাকবে।
Post a Comment
Thank You for your important feedback