উত্তর দমদম তথা বিরাটি অঞ্চল সুপ্রাচীন পূর্ববঙ্গ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের জায়গা। খুব কঠিন অবস্থা থেকে এলাকার মানুষ ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বা দাঁড়াবার চেষ্টা করেছেন। ৫৭ থেকেই এলাকাটি কংগ্রেসের হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। তখন থেকেই লাল ভূমি হিসাবে খ্যাত ছিল উত্তর দমদম বিধানসভা এলাকা। যদিও ২০০১ সালে একবার বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের অরুনাভ ঘোষ জিতেছিলেন। এরপর ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসে, তখন এই বিধানসভায় জেতেন চন্দ্রিমা ভট্টাচাৰ্য, এবং মন্ত্রী হন। কিন্তু পরেরবার ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যান সিপিএমের তন্ময় ভট্টাচার্যর কাছে। চন্দ্রিমাকে উপনির্বাচনে জিতিয়ে আনেন তৃণমূল নেত্রী এবং ফের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দেন।
একুশের ভোট কে কিভাবে প্রচার করে এবং কতটা জনমানসে প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার। এবারেও প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের তন্ময় ভট্টাচার্য, ফের তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিজেপি প্রার্থী করেছে ডাঃ অর্চনা মজুমদারকে। এই মুহূর্তে তিনি কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন দুই পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে। এই প্রথমবার ভোটে দাঁড়াচ্ছেন চিকিৎসক অর্চনা মজুমদার। তাতেই সাড়া ফেলছেন। যাই হোক প্রচারে বেড়িয়েছেন সবাই। একটা মজার বিষয়, প্রচার মিছিলে আদি ঢাকের বাদ্যের শব্দ শোনা যাচ্ছে. যা এলাকায় নতুন। এই ত্রিমুখী লড়াইয়ে কে জেতেন সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২ মে পর্যন্ত।
২০১৬ সালে উত্তর দমদমে ইন্দ্রপতন হয়েছিল। হেভিওয়েট প্রার্থী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য হেরে যান সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যের কাছে। গত বিধানসভায় তন্ময়বাবু পেয়েছিলেন ৯১,৯৫৯ ভোট যা শতাংশের বিচারে ৪৬.৩৮%, আর চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ৮৫,৪১০ ভোট। ৪৩.০৮ শতাংশ ভোট তাঁর ঝুলিতে গিয়েছিল। সেখানে বিজেপি প্রার্থী ডাঃ তপন চন্দ্র দাস পেয়েছিলেন মাত্র ১৫,৪২০ ভোট। শতাংশের হিসেবে যা ৭.৭৮% মাত্র। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেই বোঝা গেল উত্তর দমদমে বিজেপি অনেকটাই নিজেদের জমি শক্ত করে নিয়েছে।
সেক্ষেত্রে বামফ্রন্ট অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে। লোকসভা ভোটের নিরীখে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য উত্তর দমদমে পেয়েছিলেন ৭৮,৩৪৬ ভোট। আর তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় ৮৩,৯৯৫ ভোট দখল করেছিলেন। সেখানে সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্য ৩৫,৬০৪ ভোটেই সন্তুষ্ট থাকেন। ফলে এই পরিসংখ্যানই পরিস্কার, উত্তর দমদমে বিজেপি এখন অনেকটাই এগিয়েছে। ফলে বিশিষ্ট চিকিৎসক অর্চনা মজুমদার বেগ দেবেন বাকি দুই হেভিওয়েট রাজনৈতিককে।
ছবিঃ ফেসবুক...
Post a Comment
Thank You for your important feedback