অধিকারী গড় কাঁথিতে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনিই মূলত বিজেপির স্টার ক্যাম্পেইনার। আগামী শনিবারই প্রথম দফার ভোট বঙ্গে, তাঁর আগেই ভোট প্রচারে বঙ্গে এলেন প্রধানমন্ত্রী। আর এই সভা থেকেই তৃণমূল এবং তৃণমূল নেত্রীকে তীব্র আক্রামণ করলেন। এবারে নন্দীগ্রামে তৃণমূল প্রার্থী সয়ং তৃণমূল নেত্রী, সেটা মাথায় রেখেই কাঁথি থেকে তিনি বললেন, ‘দিদি, আপনাকে নন্দীগ্রাম অনেক কিছু দিয়েছে। এখন আপনি নন্দীগ্রামের মানুষদের বদনাম করছেন। সারা দেশের কাছে বদনাম করছেন। নন্দীগ্রামের মানুষরা এটা সইবেন বা। এই অপমানের সাজা দেবেন নন্দীগ্রামবাসীরা। আর এই ভোটেই দেবেন সেই সাজা’।
পাশাপাশি খেলা হবে নিয়েও তাঁর কটাক্ষ, ‘আপনি খেলা করবেন, আমরা সেবা করব। খেলা নয়, সেবা হবে, সেবা হবে’। বহিরাগত ইস্যুতেও তিনি এদিন সরব হলেন, তৃণমূল নেতারা বিভিন্ন প্রচার সভায় প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপির সর্বভারতীয় নেতাদের বহিরাগত বলছেন। এদিন তার জবাব দিতে গিয়ে মোদি বললেন, ‘বঙ্গভূমি ও ভারতভূমি একই। আমরা ভারতবাসীর সন্তান। এই বঙ্গভূমিতে কেউ বহিরাগত নন। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নন’। উল্লেখ্য, এদিনের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। কিন্তু তমলুকের সাংসদ দিব্যন্দু অধিকারী আমন্ত্রন সত্বেও সভায় যাননি।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এবার বাংলায় ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়বে বিজেপি। তার ফায়দা পাবে মেদিনীপুরের প্রতিটি পরিবার। যে মেদিনীপুর ‘বন্দেমাতরম’-এর মাধ্যমে সারা দেশকে জুড়েছিল, সেখানে ‘বহিরাগত’ স্লোগান দিচ্ছেন দিদি। এই ভূমি বঙ্কিমবাবুর, রবি ঠাকুরের, সুভাষ বসু, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের’।
এদিনের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন দুর্নীতি প্রসঙ্গে। পাশাপাশি তিনি এও হুঙ্কার দিলেন, যে বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককেই চিহ্নিত করে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বিজেপির সরকার। মোদির কথায়, ‘আজ বাংলা প্রশ্ন করছে, আমপানের টাকা, চাল কে লুটে নিল। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও কেন ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করছেন। যখন প্রয়োজন, তখন দিদি দেখেন না। আর ভোট আসলে উনি বলেন, দুয়ারে সরকার। এটাই আপনার খেলা। পশ্চিমবঙ্গের শিশুরা পর্যন্ত আপনার খেলা বুঝে গিয়েছে। এই জন্যই ২ মে দিদিকে দুয়ার দেখিয়ে দেবে। মানুষ আপনাকে দরজা দেখিয়ে দেবে’।
সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে মোদি বলেন, আমফানের জন্য পাঠানো অনুদানের টাকা ভাইপো উইন্ডোতে থেমে গিয়েছিল। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, বাংলায় কাটমানি কালচার বন্ধ করবে বিজেপি। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই দেওয়া হবে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, কৃষকদের কাছে পৌঁছতে দিচ্ছে না তৃণমূল সরকার। ভারত সরকার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দিদি কৃষকদের শত্রু হয়ে বসে রয়েছেন। তাই ২ মে সব দেওয়াল ভেঙে যাবে। বিজেপি সরকার আসবে। আর কৃষকদের তিন বছরের টাকা তাঁদের দেবই আমি। গত ৩ বছরের যে টাকা দিদি আপনাদের দিতে দেননি, আমি আপনাদের দেবই। পাশাপাশি স্থানীয় চাষিদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই অঞ্চলের কাজু চাষি, পান চাষি, ফুল চাষিদের কেন্দ্রের সব প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে।
Post a Comment
Thank You for your important feedback