২০ বছর পর সরাসরি ভোটের ময়দানে রায়বাবু?

সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা, একুশের ভোটে দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতাকে টিকিট দিতে চলেছে বিজেপি। আর তাতেই ২০ বছর পর ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হতে হবে বঙ্গ রাজনীতির ‘চাণক্য’ হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়কে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শুধু বাকি, সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা। কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছিল, দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সূত্রের খবর, দিলীপ সম্ভবত ভোটে লড়ছেন না, কিন্তু মুকুল রায়কে ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হতেই হবে। জানা যাচ্ছে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর দক্ষিণ আসন থেকে লড়তে চলেছেন মুকুল রায়। তবে দিলীপ ঘোষ যদি টিকিট পান, তবে বীরভূমের দুবরাজপুর থেকেই দাঁড়াবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

 তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটের জন্য বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তা নিয়ে স্পষ্টতই অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বুধবার দিল্লিতে সাত ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠক হয় সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বাড়িতে। সেখানে বিজেপি কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। রাজ্য বিজেপির সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের থেকে প্রার্থী নিয়ে জমা পড়া স্মারকলিপি নিয়েই দিল্লি গিয়েছিলেন। সেগুলি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ মেটাতে দলের প্রথমসারির নেতাদের টিকিট দেওয়া হবে এবার। তৃতীয় ও চতুর্থ দফার যে তালিকা প্রকাশ হয়েছিল, সেখানেও কিছু অদল বদল হতে পারে। বৃহস্পতিবারই পরের দফার তালিকা প্রকাশ করতে পারে বিজেপি। 


অপরদিকে বিজেপি সূত্রে খবর, মুকুল রায়ের ভোটে দাঁড়ানো কার্যত নিশ্চিত। তিনি টিকিট পেলে দুই দশক পর ফের সরাসরি জনতার দরবারে তাঁকে যেতে হবে। এর আগে ২০০১ সালে মুকুল রায় জগদ্দল বিধানসভা আসন থেকে ভোটে লড়েছিলেন। কিন্তু সেবার তাঁকে হারতে হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকেই রাজনীতিতে তাঁর উত্থান উল্কার গতিতে হয়েছে। তৃণমূলের হাত ধরে পরিচিতি পান, পরবর্তী সময়ে তাঁর ক্ষুরধার রাজনৈতিক বুদ্ধির জোরে দিল্লীতেও সমাদৃত হন। বিধানসভা, লোকসভা পেরিয়ে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় মনোনীত হন মুকুল রায়। একসময় রেলমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। কিন্তু তাঁকে ভোটে লড়তে হয়নি, বরং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে বঙ্গ রাজনীতিতে ‘চাণক্য’ বলেই পরিচিতি লাভ করেন বলা চলে।


 এবার তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। বিজেপিতেও সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন, কিন্তু একুশের লড়াইয়ে কিনা তাঁকেও ভোটের ময়দানে নামতে হবে? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা কেন্দ্রীয় বিজেপির সুচতুর কৌশল। যদি বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফল করে বা তিনি হেরে যান তবে মুকুল রায়কে সরিয়ে দিতে অসুবিধা হবে না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। ফলে বলাই যায়, একুশের বিধানসভা নির্বাচন কার্যত ‘অ্যাসিড টেস্ট’ মুকুল রায়ের কাছে।
 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post