কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অডিও টেপ ফাঁস হয়েছিল সোশাল মিডিয়ায়। এবার সেই অডিও টেপ নিয়ে নড়েচড়ে বসল নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল নির্বাচন কমিশন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই ওই অডিও টেপের ক্লিপিংস প্রকাশ্যে আনেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এরপর থেকেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। সূত্রের খবর, রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে নির্বাচন কমিশন জানতে চেয়েছে ওই অডিও টেপে কথোপকথনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কি ছিল। এছাডা় ওই টেপ কিভাবে তাঁদের হাতে এল সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে। কিভাবেই বা ওই কথোপকথন রেকর্ড করা সম্ভব হল সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শীতলকুচিতে পঞ্চম দফার ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়। তাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার পর একটি অডিও টেপ প্রকাশ্যে আনেন অমিত মালব্য (যদিও ওই অডিও টেপের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি সিএন নিউজের)। ওই অডিও টেপে শোনা যাচ্ছে, গুলিচালনার ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন। পার্থপ্রতিমবাবুকে তিনি বলেন, মৃতদেহগুলি যেন পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে না নেয়। সেগুলি নিয়ে পরদিন মিছিল করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা দায়ের করতে হবে। এমন করে মামলা করতে হবে যেন জেলার SP ও মাথাভাঙা থানার IC ফেঁসে যায়। এছাড়াও মৃতের পরিবার যেন এখনই পুলিশের কাছে কোনও বয়ান না দেয়। তারা কী অভিযোগ করবেন তা ভোটের পর তিনি (মমতা) বলে দেবেন বলেও বলতে শোনা গিয়েছে।
পরবর্তী সময়ে ওই বিতর্কিত অডিও টেপ নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই পক্ষই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। বিজেপির দাবি ছিল, ফাঁস হওয়া অডিও টেপের কথোপকথনেই স্পষ্ট শীলতকুচির ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যে আগুন জ্বালাতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি তাঁদের দাবি ছিল এই টেপ তৃণমূলের তরফেই ফাঁস করা হয়েছে। অপরদিকে তৃণমূলের পাল্টা দাবি ছিল, বিজেপিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে আড়ি পেতেছে। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ সবই দিল্লির নির্বাচন কমিশনে পাঠায় রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) দফতর। এরপর মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করল কমিশন।
Post a Comment
Thank You for your important feedback