মাত্র একবছর আগেই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় (Super Cyclone) আমফান আছড়ে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায়। ওই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি। ফলে মারাত্মক তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল আমফান। যার ক্ষত এক বছরেও মেটেনি বাংলার বিভিন্ন এলাকায়। আজও তার স্মৃতি টাটকা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মধ্যে। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই ফের বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়, যার নাম ওমান দিয়েছে 'ইয়াস', আরবি ভাষায় এর অর্থ দুঃখ। এখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আমফানের মতোই কী শক্তিশালী হতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস? এবারও কি প্রবল আক্রোশে তান্ডব চালাবে বঙ্গ উপকূল ও আশেপাশের জেলাগুলিতে?
অবহবিদরা অবশ্য আশ্বস্ত করছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমফানের মতো অত শক্তি সঞ্চয় করবে না ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আমফান ছিল সুপার সাইক্লোন বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু ইয়াস প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।আমফানে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হয়েছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। কিন্তু ইয়াসে ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে।
এই প্রসঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'আমফান ছিল সুপার সাইক্লোন। কিন্তু ইয়াস অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়। এর কারণ হিসেবে অবহবিদদের ব্যাখ্যা, ঘূর্ণিঝড় আমফান সমুদ্রের অনেকটা গভীরে, অবস্থানগত দিক থেকে কলম্বো থেকে ৩০০ কিলোমিটার পূর্বে। সেক্ষেত্রে ইয়াস তৈরি হয়েছে পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আমফান সমুদ্রে কমবেশি দেড় হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করেছিল। ফলে বিপুল পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছিল। কিন্তু ইয়াস সমুদ্রে কমবেশি ৭০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েই প্রবেশ করবে স্থলভুমিতে। তাই শক্তিও অনেক কম হবে বলে দাবি অবহবিদদের। তবুও হাত গুটিয়ে বসে নেই রাজ্য সরকার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে উপকূলীয় এলাকায়। তৈরি করা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সেখানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তৈরি রয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
Post a Comment
Thank You for your important feedback