প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্ন দ্রুত কাশ্মীর উপত্যাকার সঙ্গে গোটা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপন করার। তাঁরই নির্দেশে দ্রুততার সঙ্গে চলছে পাহাড় কেটে রেলপথ নির্মানের কাজ। কঠিন এই পথে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চেনাব নদী। নদী থেকে ৩৫৯ মিটার উঁচুতে ব্রিজ নির্মান করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল ভারতীয় রেল। যা এককথায় অকল্পনীয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই রেল সেতুর নির্মান কাজ প্রায় শেষে পথে। এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ব্রিজটির ইস্পাত খিলানের (Steel Arch) শেষ ভাগটি সফলভাবে স্থাপন করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এবার নীচের অংশটি (যেখান দিয়ে ট্রেন যাতায়াত করবে) জুড়লেই ব্রিজটি নির্মান সম্পন্ন হবে।
শুনলে আশ্চর্য হবেন, এই রেল ব্রিজটি প্যারিসের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ার বা দিল্লির কুতুব মিনারের থেকেও উঁচুতে তৈরি হচ্ছে। ফলে রেলের তরফে চেনাব ব্রিজকে ঐতিহাসিক আখ্যা দেওয়া হয়েছে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, একাধিক চ্যালেঞ্জ ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুর কাজ করেছেন কর্মীরা। ভৌগলিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এই জায়গায় ব্রিজ নির্মান খুবই কঠিন কাজ ছিল। তবুও আর্চ বটম স্থাপন করার পর আর বেশি কাজ বাকি থাকল না বলেই জানাচ্ছেন নির্মানকারী সংস্থা। ১.৩ কিলোমিটার লম্বা ব্রিজটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১,৪৮৬ কোটি টাকা।
কাশ্মীর উপত্যাকায় রেল লাইন বসানোর কাজ তিনটি পর্যায়ে হচ্ছে। ২৭২ কিলোমিটার এই প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে উধমপুর থেকে কাটরা পর্যন্ত ট্রেন ইতিমধ্যেই চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বানিহাল থেকে শ্রীনগর হয়ে বারামুল্লার কাজও শেষ। এই শাখাতেও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু মাঝের অংশের কাজই খুব কঠিন। কাটরা থেকে বানিহালের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে উঁচু পাহাড়ের মধ্যে দিয়েই চলছে রেল লাইন পাতার কাজ। অসংখ্য টানেল এবং ব্রিজের সাহায্যে ১১১ কিলোমিটার অংশের কাজ চলছে। যারমধ্যে চেনাব নদীর উপর তৈরি হচ্ছে বিশ্বের উচ্চতম রেল ব্রিজটি। এই অংশে ১৭৪ কিলোমিটার রেলপথ থাকছে টানেলের মধ্যে। বাকি ১২৬ কিলোমিটার টানেলের বাইরে। ২০২২ সালের মধ্যেই এই অংশের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ভারতীয় রেল। এরপরেই ভারতের যেকোনও প্রান্ত থেকে সরাসরি ট্রেনে চেপে পৌঁছে যাওয়া যাবে কাশ্মীর উপত্যকায়।
Post a Comment
Thank You for your important feedback