স্মরণকালের মধ্যে রাজধানীতে কোনও বাঙালির মুকুটে এক পালক দেখা যায়নি। বীরভূমের মিরাটি থেকে রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবন, এক অবিশ্বাস্য উত্থানের নাম ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে এত ওজনদার বাঙালি নেতাও দেখা যায়নি আর। মন্ত্রিসভার কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না তিনি, তা ভেবে বের করতে হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থেকে বিদেশ মন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এমনকী যোজনা কমনিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, কংগ্রেস রাজনীতিতে অপরিহার্যতার আরেক নাম ছিল প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই ১৯৬৯ সালে ইন্দিরা গান্ধির হাত ধরে রাজ্যসভায়। ক্রমে ইন্দিরার বিশ্বস্তদের একজন। জরুরি অবস্থার সময় যে কজন ইন্দিরাকে ছেড়ে যাননি। জরুরি অবস্থার সময় ক্ষমতার অপব্যবহারে অভিযুক্তও হন তিনি। ১৯৭৭ সালে জনতা দলের সরকারের তৈরি শাহ কমিশনের তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
India grieves the passing away of Bharat Ratna Shri Pranab Mukherjee. He has left an indelible mark on the development trajectory of our nation. A scholar par excellence, a towering statesman, he was admired across the political spectrum and by all sections of society. pic.twitter.com/gz6rwQbxi6— Narendra Modi (@narendramodi) August 31, 2020
১৯৭৩ সালে পান মন্ত্রিত্ব। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সালে ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ ছিলেন রাজ্যসভায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা। তবে রাজীব গান্ধি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তাঁর ক্যারিয়ার ছিল নিম্নমুখি। একসময় দল ছেড়ে তৈরি করেন রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস। সেই দলকে কংগ্রেস মিলিয়ে দিয়ে দলে ফিরে আসেন ১৯৮৯ সালে। ১৯৯১ সালে যোজনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হন নরসীমা রাওয়ের আমলে। তারপর হন বিদেশমন্ত্রী। ১৯৯৮ সালে দলের সভাপতিত্বে সোনিয়া গান্ধিকে আনার তিনিই ছিলেন প্রধান কারিগর। জীবনে প্রথম লোকসভার ভোটে জেতেন জঙ্গিপুর থেকে ২০০৪ সালে। হন মনমোহনের সিংয়ের মন্ত্রিসভার দুই নম্বর। পরপর প্রতিরক্ষামন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী হন তিনি। একাধিক মন্ত্রিগোষ্ঠীর মাথায় ছিলেন তিনি। পি এ সাংমাকে হারিয়ে ৭০ ভাগ ভোট পেয়ে ২০১২ সালে নির্বাচিত হন ভারতের রাষ্ট্রপতি। রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। তিনিই প্রথম প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি যিনি আরএসএসের সভায় যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে অভিজিৎ ছিলেন নলহাটির বিধায়ক, জঙ্গিপুরের সাংসদ। মেয়ে শর্মিষ্ঠা কংগ্রেস নেত্রী।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback