প্রেমিকা ও বাবা-মাকে খুন করা উদয়নের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড


বাঁকুড়ার ট্রিপল মার্ডার কেসের দোষী উদয়ন দাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল বাঁকুড়া ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। ২০১৬ সালের চাঞ্চল্যকর খুনের জন্য গতকালই দোষী সাব্যস্ত হয় উদয়ন। বুধবার তাঁর যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক। উদয়ন প্রথমে নিজের প্রেমিকা আকাঙ্ক্ষা শর্মাকে খুন করে। দেহটি ঘরের মেঝেতে পুতে দিয়ে সিমেন্টের বেদি তৈরি করে লুকিয়ে ফেলে। এরপর তাঁকে সন্দেহ করায় নিজের বাবা-মাকেও খুন করে বাড়ির উঠোনে পুঁতে দেয় সিরিয়াল কিলার উদয়ন। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভোপাল থেকে বাঁকুড়া থানার পুলিশ গ্রেফতার করে উদয়নকে। এরপরই চাঞ্চল্যকর তিনটি খুনের ঘটনা ফাঁস হয়। ভোপালের ভাড়াবাড়ির মেঝে খুঁড়ে আকাঙ্ক্ষার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আকাঙ্ক্ষার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করেই উদয়নের হদিশ পেয়েছিল পুলিশ। এরপর উদয়নকে নিয়ে বাঁকুড়ায় ফেরেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জেরা করে জানতে পারে, শুধু প্রেমিকা নয়, নিজের বাবা-মাকেও খুন করে উঠোনে পুঁতে দিয়েছে গুণধর ছেলে। ৫ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়ার রাইপুরের সুন্দরনগরে উদয়ন দাসের বাড়ির উঠোন খুঁড়ে উদ্ধার হয় বাবা বীরেন্দ্রনাথ দাস ও মা ইন্দ্রানী দেবীর মৃতদেহ। পুলিশ উদয়নের বিরুদ্ধে অপহরণ, খুন, প্রমাণ লোপাট, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারপর্ব চলে।

উল্লেখ্য, নিজেকে মার্কিন বহুজাতিক সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার দাবি করে সোশাল মিডিয়ায় উদয়ন আলাপ করে আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে। তাঁকে আমেরিকায় ইউনিসেফে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে দিল্লি নিয়ে যায়। এরপর থেকেই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ কমতে থাকে আকাঙ্ক্ষার বাবা-মায়ের। অপরদিকে আকাঙ্ক্ষাকে প্রথমে দিল্লি ও পরে ভোপালে আটকে রাখে উদয়ন। কিন্তু সেখান থেকে পালানোর ছক করে আকাঙ্ক্ষা। ফলে তাঁকে ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই শ্বাসরোধ করে খুন করে উদয়ন। খুনের পরও বাঁকুড়ায় আকাঙ্ক্ষার বাড়ি আসে উদয়ন। মেয়ে আমেরিকায় আছে বলে টাকাও হাতিয়ে নিয়ে যায় সে। কিন্তু দীর্ঘদিন মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে আকাঙ্খার বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই তদন্তে গতি আসে। ভোপাল থেকে গ্রেফতার হয় উদয়ন।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم