রাজভবনে চলছে নজরদারি, অভিযোগ রাজ্যপালের


 
স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে রাজভবনে চা চক্রের আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকালেই রাজভবনে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে আসেন আচমকা। ফলে বিকেলের চা-চক্রে যথারীতি গড়হাজির থাকেন তিনি। রবিবার প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্মরণ অনুষ্ঠানে এই ঘটনা নিয়ে সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই সঙ্গে তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, রাজভবনে চলছে নজরদারি। পাচার হয়ে যাচ্ছে গোপন নথিও। রাজ্যপালের কথায়, ‘রাজভবনে নজরদারি চলছে। এটা হওয়া উচিত নয়। সাবিধানিক প্রধানের দফতরে কী করে নজরদারি চলতে পারে? রাজভবনের কোনও নথি আমার অনুমতি ছাড়া বাইরে যেতে পারে না। কিন্তু রাজভবনের নথি বাইরে চলে যাচ্ছে। ইলেক্ট্রনিক অ্যাপের মাধ্যমে রাজভবনের নথি পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে আমি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর মূল্য চোকাতে হবে’।

অপরদিকে এদিন ফের একটি টুইট করে রাজভবনের চা-চক্র অনুষ্ঠানের কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের ডাকে সাড়া দিয়ে ওই অনুষ্ঠানে সমাজের নানা ক্ষেত্রের গুণীজনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আধিকারিকরাও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সরকারের শীর্ষ আমলাদের কেউ যাননি রাজভবনে। তবে মুখ্যমন্ত্রী না এলেও প্রোটকল মেনে চা-চক্রে তাঁর জন্য আলাদা আসন রাখা হয়। সেই ফাঁকা আসনের ছবি পোস্ট করে গতকাল রাতে টুইটারে তোপ দেগেছিলেন রাজ্যপাল। তিনি সেই টুইটে লেখেন, ‘রাজভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আসনটি রাখা হয়েছিল। কিন্তু ফাঁকা আসনটি থেকেই স্পষ্ট যে একটা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যা কিনা বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং নৈতিকতার সঙ্গে খাপ খায় না। এই অনাবশ্যক অবস্থানের সপক্ষে কোনও যুক্তিই খাটে না’।

রবিবারের অনুষ্ঠানেও এই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক হিংসার কথা তুলেও বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনও রাজ্যে পতাকা তোলা নিয়ে বিবাদে খুন হতে হয়েছে একজনকে। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক হিংসা এবং হত্যার ঘটনা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলাকে আরও বিপজ্জনক করে তুলছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে ফের নজীরবিহীন আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে আঙ্কেলজি বলে উল্লেখ করে তাঁর কটাক্ষ, ‘আঙ্কেলজি এখন দাবি করছেন, তিনি ও পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনে নজরদারি চলছে। বিশ্বাস করুন, এই কাজটা আপনার গুজরাটের বস-রা যে কারও থেকে ভাল করেন। আমরা তো তাদের কাছে শিশু’। সবমিলিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم