আয়তনে ছোট হলেও প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে সুন্দরী ত্রিপুরাকে। উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরাই আয়তনে সবচেয়ে ছোট রাজ্য। কিন্তু পাহাড়, জঙ্গল ঐতিহাসিক স্থাপত্যে ত্রিপুরা অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী। আর আরেকটা দিক থেকে ত্রিপুরা বাঙালিদের কাছে আপন, সেটা হল সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। এখানকার ভাষাও বাংলা। তাই ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় ঘোরাঘুরি করলে মনে হবে যেন আপনি বাংলাতেই আছেন।
আগেই বলেছি আগরতলা হল আপাদমস্তক বাঙালি শহর। আর শহর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান দ্রষ্টব্য। কিন্তু ওই, ঘুরতে ফিরতেই মনে হবে এই শহর যেন কতই না চেনা। যাইহোক, আগরতলার মূল দর্শনীয় স্থান হল উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। ১৯০১ সালে এই দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদটি তৈরি হয়েছিল ত্রিপুরার রাজা রাধাকিশোর মাণিক্যর রাজত্বকালে। সুবিশাল এই প্রাসাদের সামনে রয়েছে দুটি বিশাল দীঘি ও একটি সাজানো গোছানো বিশাল উদ্যান। ত্রিপুরা রাজবংশের অসংখ্য নিদর্শন, তৈলচিত্র, অস্ত্রশস্ত্র, মুদ্রা, পোশাক-পরিচ্ছদ, বসন-ভূষণ অতি যত্নে রাখা আছে এই প্রাসাদের মিউজিয়ামে।
কমলাসাগর আসলে এক বিশাল দীঘি। যা ত্রিপুরার মহারাজা ধন্যমাণিক্য তাঁর স্ত্রী কমলাদেবীর ইচ্ছা অনুসারে খনন করিয়েছিলেন। কমলাসাগর দীঘির কাছেই কাঁটাতারের বেড়া, ওপারেই বাংলাদেশ। এই জায়গাটির আসল নাম ছিল কসবা, যা বর্তমানে বাংলাদেশে। কিন্তু দেশভাগের পর দীঘিটি ভারতের অংশে পড়ে। ফলে এলাকার নাম দিঘির নামেই হয়ে যায়। এই কমলাসাগরের পাড়েই মহারাজা তৈরি করেছিলেন কালী মন্দির, যা আজও কসবা কালীবাড়ি বলে পরিচিত। আগরতলা থেকে কমলাসাগরের দূরত্ব মাত্র ২৮ কিলোমিটার।
আগরতলা থেকে সিপাহিজলার দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। এটি মূলত একটি অভয়ারণ্য, তবে চিড়িয়াখানা রয়েছে সাধারণ পর্যটক ও দর্শকদের জন্য। সিপাহিজলার আয়তন মাত্র ১৮.৫৩ বর্গ কিমি হলে কী হবে, জীব বৈচিত্রে ভরপুর। এই অভয়ারণ্যে রয়েছে লজ্জাবতী বাঁদর, লাঙ্গুর, ক্যাপ্ড লাঙ্গুর, সজারু, বার্কিং ডিয়ার, ক্লাউডেড লেপার্ড ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। তবে এখানকার মূল বৈশিষ্ট হল চশমা বাঁদর। যা বেশ বিরল প্রজাতির।
রাতের উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ
এখানে বাঙালির সংখ্যাও অনেক বেশি। ত্রিপুরা ভ্রমণ শুরুও হয় আগরতলা দিয়ে। যাতায়াতের সমস্যার জন্যই এখানে পর্যটনের প্রসার কম। কলকাতা থেকে আগরতলা আসার একমাত্র ট্রেন হল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। তবে সেটা সময় সাপেক্ষ। বিমানপথে কলকাতা থেকে আগরতলার পৌঁছে যাওয়া যায় মাত্র ৫৫ মিনিটে। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে এই অল্প সময়ের মধ্যেই ত্রিপুরার রাজধানীতে পৌঁছে যায় বিমান। আগেভাগে টিকিট কেটে রাখলে বিমান ভাড়াও খুব বেশি পড়বে না।উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ, আগরতলা
আগরতলা-আগেই বলেছি আগরতলা হল আপাদমস্তক বাঙালি শহর। আর শহর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান দ্রষ্টব্য। কিন্তু ওই, ঘুরতে ফিরতেই মনে হবে এই শহর যেন কতই না চেনা। যাইহোক, আগরতলার মূল দর্শনীয় স্থান হল উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। ১৯০১ সালে এই দৃষ্টিনন্দন প্রাসাদটি তৈরি হয়েছিল ত্রিপুরার রাজা রাধাকিশোর মাণিক্যর রাজত্বকালে। সুবিশাল এই প্রাসাদের সামনে রয়েছে দুটি বিশাল দীঘি ও একটি সাজানো গোছানো বিশাল উদ্যান। ত্রিপুরা রাজবংশের অসংখ্য নিদর্শন, তৈলচিত্র, অস্ত্রশস্ত্র, মুদ্রা, পোশাক-পরিচ্ছদ, বসন-ভূষণ অতি যত্নে রাখা আছে এই প্রাসাদের মিউজিয়ামে।
উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ
পাশাপাশি ত্রিপুরার বিভিন্ন অংশের নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও রাখা আছে এই মিউজিয়ামে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাতবার এসেছিলেন ত্রিপুরায়। এখানকার রাজপরিবারের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এই প্রাসাদের প্রদর্শনী কক্ষটি দেখার মতো। জানিয়ে রাখি প্রাসাদের মিউজিয়ামটি প্রতি সোমবার ও সরকারি ছুটির দিন বন্ধ থাকে। সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১৫ টাকা। উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ দেখা হলে এবার চলুন আগরতলার অন্যতম দ্রষ্টব্য হেরিটেজ পার্কে। গোটা ত্রিপুরার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, দর্শনীয় স্থান, ও রেল-সড়ক পথের মডেল এখানে স্থান পেয়েছে। এছাড়া আগরতলায় দেখুন জগন্নাথ মন্দির, আনন্দময়ী মায়ের মন্দির, চতুর্দশ দেবতার মন্দিরের মতো কয়েকটি ধর্মীয় স্থান। এবার জেনে নেওয়া যাক ত্রিপুরার অন্যান্য দেখার জায়গাগুলি সম্পর্কে।ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ও দেবী মূর্তি
কমলাসাগর-কমলাসাগর আসলে এক বিশাল দীঘি। যা ত্রিপুরার মহারাজা ধন্যমাণিক্য তাঁর স্ত্রী কমলাদেবীর ইচ্ছা অনুসারে খনন করিয়েছিলেন। কমলাসাগর দীঘির কাছেই কাঁটাতারের বেড়া, ওপারেই বাংলাদেশ। এই জায়গাটির আসল নাম ছিল কসবা, যা বর্তমানে বাংলাদেশে। কিন্তু দেশভাগের পর দীঘিটি ভারতের অংশে পড়ে। ফলে এলাকার নাম দিঘির নামেই হয়ে যায়। এই কমলাসাগরের পাড়েই মহারাজা তৈরি করেছিলেন কালী মন্দির, যা আজও কসবা কালীবাড়ি বলে পরিচিত। আগরতলা থেকে কমলাসাগরের দূরত্ব মাত্র ২৮ কিলোমিটার।
কমলাসাগর দীঘি
সুবিশাল দীঘির কাছেই এক উঁচু টিলার ওপর মন্দিরটি। নামেই কালীবাড়ি কিন্তু এখানে পূজিত হন দেবী সিংহবাহিনী দশভুজা। মন্দিরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হল এখানকার আরতি। দেখে মন ভরে যাবে। রবিবার কমলাসাগর দিঘির পারে একটি হাট বসে। সেখানে ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও কৃষকরা নানান পসরা সাজিয়ে বসেন। দু'দেশের সরকার যৌথ উদ্যোগেই এই হাট বসায়। এই হাট ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা বেশ মজাদার। তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে ভোটার কার্ড জমা দিয়ে ঢুকতে হবে হাট চত্বরে। কমলাসাগরে রয়েছে 'কুমিল্লা ভিউ ট্যুরিস্ট লজ। এখানে একরাত কাটানোই যায়, ঘরের ব্যালকনি অথবা ছাদে বসে বাংলাদেশের কসবা শহর ও রেলস্টেশনে রেলগাড়ির আনাগোনা দেখতে ভালোই লাগবে। শান্ত ও নির্জন কমলাসাগরে বিকেল বেলা এদিক-ওদিক ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতাও ভলো লাগবে।কমলাসাগর সিংহবাহিনী দশভুজা মন্দির
সিপাহিজলা-আগরতলা থেকে সিপাহিজলার দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। এটি মূলত একটি অভয়ারণ্য, তবে চিড়িয়াখানা রয়েছে সাধারণ পর্যটক ও দর্শকদের জন্য। সিপাহিজলার আয়তন মাত্র ১৮.৫৩ বর্গ কিমি হলে কী হবে, জীব বৈচিত্রে ভরপুর। এই অভয়ারণ্যে রয়েছে লজ্জাবতী বাঁদর, লাঙ্গুর, ক্যাপ্ড লাঙ্গুর, সজারু, বার্কিং ডিয়ার, ক্লাউডেড লেপার্ড ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। তবে এখানকার মূল বৈশিষ্ট হল চশমা বাঁদর। যা বেশ বিরল প্রজাতির।
চশমা বাঁদর
সিপাহিজলায় অনেকখানি জায়গা জুড়ে রয়েছে চিড়িয়াখানা। খোলামেলা পরিবেশে পশুপাখি দেখার অভিজ্ঞতাও দারুণ লাগবে। এখানে রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির পশুপাখি। সিপাহিজলায় একটি কৃত্রিম লেক তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য। সেখানে বোটিং করা যায়। লেকের জলে পাখিদের হুটোপুটি দেখতে ভালোই লাগবে। এই চিড়িয়াখানা শুক্রবার বন্ধ থাকে। আগরতলা থেকে প্রচুর বাস পাবেন যেগুলি সিপাহিজলা অভয়ারণ্যের গেটে নামিয়ে দেবে। এই পর্বে এই পর্যন্তই, পরের পর্বে ত্রিপুরার অন্যান্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলি নিয়ে কথা বলবো।সিপাহিজলা চিড়িয়াখানা
Tripura is a very beautiful state .
ردحذفإرسال تعليق
Thank You for your important feedback