আসন্ন বিধানসভা ভোট, উত্তরবঙ্গে ‘কল্পতরু’ মমতা

কোনও অছিলাতেই কাজে গড়িমসি করা যাবে না। প্রায় ৮ মাস পর উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক কর্তাদের কাজ নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এদিন রীতিমতো ধমকের সুরেই বলেন, ‘ইন্সপেক্টর-রাজ বেশি চলছে, জনস্বার্থে কাজ কম হচ্ছে। আমি সব খোলনলচে পালটে দেব। ১০০ শতাংশ কাজ চাই, ১০০ শতাংশ অভিযোগের সুরাহা করতে হবে’। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় আলিপুরদুয়ার আর জলপাইগুড়ি প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখানেই কাজের খতিয়ান চাইলেন তিনি। আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর উত্তরবঙ্গে ক্রমাগত শক্তিবৃদ্ধি করছে বিজেপি। তাই এই প্রশাসনিক বৈঠকের গুরুত্ব অপরিসীম মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেটা তিনি ভালোভাবেই কাজে লাগালেন।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুদিনের সফরের প্রথমদিনেই কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী। একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করলেন এদিন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল ‘চা-সুন্দরী’। এদিন উত্তরবঙ্গের ৩৭০টি চা বাগানের গৃহহীন শ্রমিকদের জন্য নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই নাম তিনি দিয়েছেন চা-সুন্দরী। তিনি জানিয়েছেন, ‘চা সুন্দরী প্রকল্পে ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। তিনবছরের মধ্যে প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হবে’। তবে যাদের নিজস্ব বাড়ি নেই তাঁদেরই প্রথমে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, প্রথম পর্যায়ে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের মোট ৭টি চা বাগানের ৩,৬৯৪টি পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তার মধ্যে আলিপুরদুয়ারে ৫টি চা বাগানের ২,৬৪১ টি পরিবার রয়েছে। পাশাপাশি কামতাপুরি ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে কামতাপুরি ভাষা আকাদেমির পক্ষে অতুল রায়ের হাতে ৫ কোটি অনুদান তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্সাদুয়ার ফোর্ট সংস্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন। রাজবংশী ভাষা প্রসারের জন্যও অনুদান দেওয়ার কথা বুধবার। এছাড়া এদিন পুরোহিত কল্যাণ প্রকল্পের আওতায় জল্পেশ মন্দিরের পুরোহিত বিজয় চক্রবর্তীর হাতে ভাতা তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই প্রকল্পে পুরোহিতরা মাসিক ১০০০ টাকা ভাতা ছাড়াও বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা অনুদান পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন, রাজ্যের ২৩টি জেলায় ১৮,৩১১টি মন্দিরের পুরোহিতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি করোনা যোদ্ধাদের জন্যই উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে পুলিশের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। সেদিকে বিশেষ নজর দিয়ে পুলিশকর্মীদের সতর্ক হয়ে কাজ করতে বলেছেন তিনি।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم