ভাঙল কাঁটাতারের বেড়া, জুড়ছে ভারত-বাংলাদেশের পুরোনো রেললাইন

 


 
একসময় সড়ক ও রেল পথে দুই বাংলার মধ্যে যোগাযোগ ছিল নিয়মিত। কালের নিয়মে দুই দেশের মধ্যে পড়েছে কাঁটাতারের বেড়া। মাত্র কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে চলে পণ্য ও মানুষের যাতায়াত। বাকিগুলি কাঁটাতারেই আটকে রয়েছে। এবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ এক সীমান্তের রেললাইন ফের চালু হতে চলেছে। হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ পুনরায় চালুর জন্য বেড়ার কিছুটা অংশ সম্প্রতি ভেঙে ফেলা হল। আর ওই পথেই রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু করল ভারতীয় রেল। জানা যাচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নতুন লাইন পাতার কাজ শেষ হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৭৮২/২ পিলারের কাছে ১৫ মিটার কাঁটাতারের বেড়া ভাঙা হয় দিন কয়েক আগে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতেতেই এই কাজ হয়েছে। এই ১৫ মিটার জায়গা দিয়েই যাবে আন্তর্জাতিক রেলপথ। এরজন্য ১০ মিটার জায়গা বরাদ্দ থাকবে আর বাকি ৫ মিটার নিরাপত্তারক্ষীদের যাতায়াতের জন্য। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এই পথে রেল যোগাযোগ। তবে সম্প্রতি দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও আলোচনায় ফের এই রেলপথ চালুর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ভারতীয় রেলই এই রেলপথ নির্মানের দায়িত্ব নিয়েছে। মাত্র ২০০ মিটার নতুন রেললাইন তৈরি করলেই দু’দেশের রেলপথ জুড়ে যাবে। ভারতের দিকে ১৫০ মিটার ও বাংলাদেশের দিকে ৫০ মিটার নতুন লাইন পাতলেই হয়ে যাবে। যার কাজ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রেলের আধিকারিকরা।
১৯৪৭ সালেও ভারত ও পূর্ব-পাকিস্তানের মধ্যে এই পথে রেল যোগাযোগ চালু ছিল। তবে ১৯৬৫ সালে ভারত-চিন যুদ্ধের পর এই রেলপথ পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তার আগে শিয়ালদা থেকে ট্রেন ছেড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চিলাহাটি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাতায়াত করতো। বর্তমানে এই রেলপথ চালু করার উদ্দেশ্য হলদিবাড়ি স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে রুপান্তরিত করেছে রেলমন্ত্রক। যাত্রীবাহী ট্রেনও যাতে চালানো যায় তারই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রেল। অপরদিকে অধুনা বাংলাদেশের ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশনকে নতুন করে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ সরকার। হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ৩.৩৪ কিমি রেলপথ তৈরি করেছে ভারত। অপরদিকে চিলাহাটি থেকে ৬.৭৪ কিমি রেলপথ বানিয়েছে বাংলাদেশ। ঠিক হয়েছে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন। তবে করোনার জেরে এই কাজ বেশ কয়েকদিন পিছিয়ে যাওয়ায় উদ্বোধণের দিনও পিছিয়েছে। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ রয়েছে বনগাঁ-বেনাপোল ও গেদে-দর্শনা সীমান্তে। পাশাপাশি ত্রিপুরার নগরউখরা সীমান্তেও রেলপথ নির্মানের কাজ চলছে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم