গরু পাচারে সিবিআইয়ের র‌্যাডারে আরও অনেক রাঘববোয়াল?



গরু পাচার নিয়ে তদন্তে নেমে এফআইআর দায়ের করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। বুধবারই সিবিআইয়ের কয়েকটি দল সল্টলেক, নিউটাউন সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তল্লাশি চালায়। পাশাপাশি সিবিআই তদন্তকারীরা জানতে পারছেন ‘সর্ষের মধ্যেই রয়েছে ভূত’। আন্তর্জাতিক গরুপাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ডেন্ট সতীশ কুমারের নাম। পাশাপাশি এই চক্রের কারবারি এনামুল হক সহ আরও তিন ব্যবসায়ীও সিবিআইয়ের আতস কাঁচের নীচে রয়েছে। এবার সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে গরু পাচার চক্রে উঠে আসছে আরও ১২ জনের নাম। এদের মধ্যে ৭ জন বিএসএফ আধিকারিক ও ৫ জন কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের আধিকারিক।



এরা প্রত্যেকেই এনামুল হকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। এনামুল ছাড়াও আনারুল শেখ ও গোলাম মোস্তাফা আরও দুই ব্যবসায়ীও গরু পাচারে যুক্ত বলে জানতে পেরেছে সিবিআই গোয়েন্দারা। বিএসএফ ও কাস্টমস (শুল্ক দফতর) আধিকারিকদের মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে কম দামে নিলামে গরু কিনে বাংলাদেশে পাচার করতেন এই ব্যবসায়ীরা। এনামুলের সঙ্গে রাজ্যের বেশ কযেকজন হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলেও জানা যাচ্ছে। এরমধ্যে যেমন শাসকদলের নেতাও আছেন তেমনই বিরোধী দলের নেতাও রয়েছেন। এই নেতা-মন্ত্রীরা নিয়মিতভাবে গরু বিক্রির টাকার ভাগ পান বলেই জানতে পেরেছে সিবিআই। তবে তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করতে নারাজ সিবিআই। তবে এই ব্যাপারে একাধিক রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের গোয়েন্দাবাহিনীও একই সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে ওপার বাংলার কয়েকজন ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে।



এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হুন্ডি হাজি। মূলত হাওলা ও হুন্ডির মাধ্যমে পাচারের টাকা লেনদেন হত। আর এই লেনদেনের মূলে রয়েছে হুন্ডি হাজি। জানা যাচ্ছে আরও দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এসেছে এই চক্রে। এরমধ্যে একজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। অপরজন দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের। যারা বর্তমানে সিবিআইয়ের আতস কাঁচের তলায় রয়েছেন। শুধু তাই নয়, গরু পাচারের টাকা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির কাছে চলে যাচ্ছে বলেও জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এপার বাংলা থেকে গরু ওপার বাংলায় যেত, সেই টাকায় অস্ত্রশস্ত্র এপার বাংলায় চলে আসত একই পথে। যা বিভিন্ন সন্ত্রাসবাসী সংগঠনের হাতে চলে যাচ্ছিল। ফলে তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم