অনেক কিছুই গোপন করেছিলেন নির্যাতিতা। তদন্ত যত এগিয়ে যাচ্ছে ততই রহস্য দানা বাঁধছে আনন্দপুর শ্লীলতাহানি কাণ্ডে। গাড়ির ভিতর অভিযুক্তের হাতে অত্যাচারিত হয়েও তথ্য গোপন করে পুলিশকে বিভ্রান্ত করছেন নির্যাতিতা। এমনকী অভিযুক্তের যে নাম-পরিচয় তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন সেটাও ভুয়ো ছিল। তিনি বলেছিলেন মাত্র এক সপ্তাহ আগেই আলাপ হয়েছিল সোশাল মিডিয়ায়। কিন্তু মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার পর পুলিশ জানতে পারেন তাঁর নাম অমিতাভ বসু নয়, বরং অভিষেক পাণ্ডে।
পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা ফোনে কথা বলেন নীলাঞ্জনাদেবীর সঙ্গে
পুলিশ তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে লালবাজারে। এবং তাঁকে জেরা থেকেই উঠে এসেছে কয়েকটি বিস্ফোরক তথ্য। নির্যাতিতার সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। এমনকি তাঁরা একসঙ্গে কাজও করতেন এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে। এর আগেও তাঁরা বহুবার আউটিংয়ে গিয়েছিলেন একসঙ্গে। এখনও অধরা অভিষেক, তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে আনন্দপুর থানার পুলিশ। অপরদিকে নির্যাতিতাকেও জেরা করছে তদন্তকারীরা। জানার চেষ্টা চলছে কেন তিনি তথ্য গোপন করেছিলেন। কেনই বা আড়াল করছেন অভিযুক্তকে। আনন্দপুর থানার পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করছে লালবাজারের অ্যান্টি রাউডি সেকশন (এআরএস)।
লালবাজারে অভিযুক্তের মা
অভিযুক্ত অভিষেকের মাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর তিনবছর আগে বিয়ে হয়েছিল এক ভিনরাজ্যের মহিলার সঙ্গে। কিন্তু স্ত্রীকে অত্যাচার করতেন অভিষেক, তাই বিচ্ছেদ হয়ে যায় দুজনের। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন অভিষেক। একাধিক মহিলার সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল তাঁর। এমনকী নির্যাতিতার সঙ্গেও তাঁর আলাপ বহুদিনের। তাঁর ফ্ল্যাটেও যেতেন অভিষেক। তবে কেন নির্যাতিতা তরুণী ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেন সেটা স্পষ্ট নয়। অপরদিকে, নির্যাতিতাকে বাঁচানোর জন্য যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেই নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা খানিকটা অবনতি হলেও এখন স্থিতিশীল।
মঙ্গলবার বেশ কয়েকবার বমি করেছেন তিনি। ফলে তাঁর সিটি স্ক্যান করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বামী দীপ শতপথি। এদিন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা ফোনে কথা বলেন নীলাঞ্জনাদেবীর সঙ্গে। তিনি তাঁর সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়ে পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকার নীলাঞ্জনাদেবীর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করবে বলেও জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback