১২ বছরেও মারাদোনার শিলান্যাস করা ফুটবল আকাদেমি তৈরি হল না মহেশতলায়

 ২০০৮ সালে মহেশতলায় এসেছিলেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। নিজের হাতেই শিলান্যাস করেছিলেন নিজের নামাঙ্কিত একটি ফুটবল আকাদেমির। এরমধ্যে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১২ বছর, আজ মারাদোনা প্রয়াত, তবুও সেই ফুটবল আকাদেমি বাস্তবের মুখ দেখেনি। মহেশতলা পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের গুমোরজলায় বেশ কয়েক একর জমিতে আবাসন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল।

২০০৮ সালে তখন ওই পুরসভা বামফ্রন্টের দখলে ছিল। ওই আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে তৎকালীন বাম পরিচালিত মহেশতলা পুরসভার চুক্তি হয় আবাসনের পাশেই ফাঁকা জমিতে ফুটবল আকাদেমি তৈরি করতে হবে। সেইবছরই কলকাতায় আসেন ফুটবলের কিংবদন্তি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মারাদোনা। মহেশতলা পুরসভা তাঁকে সেখানে নিয়ে যায় এবং তাঁকে দিয়েই ফুটবল আকাদেমির শিলান্যাস করানো হয়। ঠিক হয়েছিল ওই একাডেমির নামও হবে মারাদোনার নামে। 


 


ওই আবাসন নির্মাণকারী সংস্থা ও পুরসভার মধ্যে ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। মোট ২৩ একর জমি হস্তান্তর হয়েছিল। এরপরই ওই আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। ২০০৯ সালেই পুরসভা হাতছাড়া হয় বামেদের। এবং তৃণমূল কংগ্রেস পুরসভার দখল নেয়। তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের আমলে ১০ বছরের বেশি কেটে গেলেও ওই ফুটবল আকাদেমি সেই তিমিরেই পড়ে রয়েছে। বিষয়টি প্রায় ধামাচাপা পড়ে গেলেও মারাদোনার মৃত্যুর পরই ফের বিতর্ক উস্কে উঠেছে। 

 


 

 

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বর্তমানে মহেশতলা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য আবু তালেব মোল্লা তৎকালীন বাম পুর বোর্ডের ওপরই দায় ঠেলে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, আবাসন তৈরি করার পাশাপাশি ফুটবল আকাদেমি এবং একটি হাসপাতাল তৈরির জন্য আবাসন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে ৩০ একর জমি ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়েছিল। সবমিলিয়ে জমির পরিমাণ ছিল ৫৩ একর। সেসময় এর বাজার দর ছিল ৪২ কোটি টাকা। অভিযোগ ওই আবাসন কর্তৃপক্ষ ৪২ কোটি টাকার মধ্যে ২৯ কোটি টাকা মিটিয়ে দিলেও বাকি ১৩ কোটি টাকা এখনও দেয়নি। ফলে নির্ধারিত জায়গায় ফুটবল আকাদেমি এবং হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব হয়নি। 




পাশাপাশি মহেশতলা পুরসভার তৎকালীন বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসের আবু তালেব মোল্লা জানিয়েছেন, মারাদোনাকে এখানে আনার জন্য টাকা নয়ছয় করেছিল বাম পুর বোর্ড। তাঁর অভিযোগ, মারাদোনাকে নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন বাম পরিচালিত বোর্ড বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছিল। যেই টাকা মহেশতলাবাসীর টাকা। 

 

তিনি আরও জানান, মারাদোনাকে নিয়ে আসা, হেলিকপ্টার এবং যে বাসের ব্যবহার করা হয়েছিল তার খরচও বহন করেছিল পুরসভা। পাশাপাশি আনুমানিক  ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি রুপোর তাজমহলও উপহার দেওয়া হয়েছিল মারাদোনাকে। কিন্তু তাঁর হাতে শিলান্যাস হওয়া ও তাঁর নামাঙ্কিত ফুটবল আকাদেমি আজও তৈরি হয়নি। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে মহেশতলাবাসীর মধ্যে।


Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم