সদ্য তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক ত্যাগ করে বিজেপিতে এসেছেন তিনি। আর প্রথম জনসভা থেকেই পুরোনো দল তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে সভা ছিল বিজেপির। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গেই সেখানে পৌঁছে যান শুভেন্দু। আর ওই সভাতে নিজের ভাষণে পুরোনো দলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলে ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন’ চাইলেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বিজেপির সাহায্য না পেলে তৃণমূল দলটাই উঠে যেত’।
এর আগে শনিবার তাঁর বিজেপিতে যোগদানের সভায় তৃণমূল যুব সভাপতির নাম উচ্চারণ না করে ‘ভাইপো হঠাও’ স্লোগান তুলেছিলেন শুভেন্দু। এদিনও তিনি একই কথা বলেন। পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘বিজেপি-তে যোগ দিয়ে আমার একটাই লক্ষ্য, ভাইপো হঠাও’। উল্লেখ্য, তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকেই তাঁকে প্রকাশ্যে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেছিলেন। এদিন তারও জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে আমি আমার নৈতিকতা কোনও দিনও বিসর্জন দিইনি। গত ২৭ নভেম্বর আমি তিনটি দফতরের মন্ত্রিত্ব সহ যাবতীয় সরকারি পদে ইস্তফা দিয়েছিলাম। এরপর আমি বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। আমার পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছি। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল আমাকে যদি সদস্যপদ দেয় আমি তা নিতেই পারি। বহুদলীয় গণতন্ত্রে আমার রাইট আছে’।
এরপরই পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘গত তিন ন ধরে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বাসঘাতক, মিরজাফর বলছেন। বন্ধু তাদের আমি প্রশ্ন করতে চাই, ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে ৯৮-এর লোকসভা ভোট, ৯৯-এর বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কারা ছিল? সেদিন যদি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী, ভারতবর্ষের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি তৃণমূল কংগ্রেসকে আশ্রয় না দিতেন তাহলে এই পার্টিটা ২০০১ সালের আগেই উঠে যেত। এটা তো অস্বীকার করতে পারবেন না’? এদিন শুভেন্দুর ভাষণে আগাগোড়াই ছিল পুরোনো দলের প্রতি তীব্র আক্রমণ। শাসকদলের নেতাদের তোলাবাজ বলে তিনি তোপ দাগেন, ‘রাজ্যে তোলাবাজি চলছে। গরু, কয়লা, মাটি সব কিছু থেকে টাকা তুলছে তৃণমূল। বাকি আছে শুধু কিডনি পাচার। এবার ক্ষমতায় এলে সেটাও করবে’।
শুভেন্দু ছাড়াও এদিন পূর্বস্থলির সভায় ভাষণ দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়েছেন। দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘রাজ্যে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতির জন্য হাইকোর্ট সেই নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে। ফলে বহু যুবক-যুবতী চাকরি পাননি। কিন্তু এর আগেই এক এক জনের কাছ থেকে ১০ লাখ, ১২ লাখ করে টাকা নিয়েছে তৃণমূল নেতারা। আমি বলছি, যে নেতাদের টাকা দিয়েছেন, তাঁদের কলার ধরে বলুন, টাকা ফেরত দিতে’।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback