ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর। রবিবার অশোকনগর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইগাছি এলাকায় ওএনজিসির অষ্টম তেল ও গ্যাস উৎপাদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।একদিকে রাজ্যে ২দিনের সফরে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অন্যদিকে আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গ্যাস প্রকল্পের উদ্বোধন। সবমিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও কোনঠাসা করতে চাইছে রাজ্য সরকারকে।
এদিন ওনজিসির অনুষ্ঠানে এসেও ‘সোনার বাংলা’ এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তোলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলার জন্য আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাশক্তির জন্য দেশ আত্মনির্ভর হচ্ছে। পূর্ব ভারতে বেশি করে সাফল্য মিলছে। তাঁর দাবি, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কেন্দ্র হওয়া মানে স্থানীয় এলাকার অর্থনীতির উন্নতি।অশোকনগর থেকে উত্তোলিত তেল ট্যাঙ্কারে করে হলদিয়া শোধনাগারে যাবে।স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় বাড়বে কর্মসংস্থান। বিজেপির সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নও পূরণ হবে।
গত
মাসেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী উত্তর ২৪ পরগনার
এই অশোকনগরে ওএনজিসি-র প্রকল্পে বাণিজ্যিক ভাবে তেল উত্তোলনের সম্ভাবনার
কথা জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২ বছর আগে ওএনজিসি অশোকনগরে পেট্রোলিয়াম ও
প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার খুঁজে পায়। ২০১৮ সালে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো
হয়, অশোকনগরের একটি কুয়ো থেকে প্রতিদিন ১ লাখ ঘন মিটার গ্যাস নির্গত হচ্ছে।
তবে তা ব্যবহারের যোগ্য কিনা তা জানতে ওই উত্তোলিত তেল হলদিয়া শোধনাগারে
পাঠিয়ে গুণমান খতিয়েও দেখা হয়। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রায় তিন হাজার
কোটি টাকা লগ্নি করেছে ওএনজিসি। ভবিষ্যতে আরও লগ্নি হবে বলেও এদিন জানিয়ে
দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এরআগেও পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় গ্যাস
পাওয়া গেলেও দেখা যায়, তা ব্যবহারের অযোগ্য ছিল। কিন্তু অশোকনগরের বাইগাছি
এলাকায় পাওয়া গ্যাস ও তেল ব্যবহারের যোগ্য।
ইতিমধ্যেই হাবড়া-নৈহাটি সড়ক থেকে প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত নতুন রাস্তা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। ওএনজিসি-র প্রকল্পে ঢোকার মুখেই বসানো হয়েছে লোহার গেট। জানা গেছে, পরীক্ষামূলক ভাবে ৪ একর জমিতে কাজ চলার পর এখন আরও সাড়ে ১০ একর জমি প্রয়োজন। ওই জমি চেয়ে ইতিমধ্যেই ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। অশোকনগর পুরসভার পক্ষ থেকে ওই জমির জন্য নো অবজেকশন ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রকল্প নিয়েও শুরু হয়েছে জমি বিতর্ক। ওই প্রকল্পর অধিগৃহীত জমিতে যাঁরা চাষ করতেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও কর্মসংস্থানের দাবিতে কিছু বিক্ষোভ দেখায়। তবে ভবিষ্যতে উন্নয়নের আশায় খুশি এলাকাবাসীদের বড় অংশ। নতুন আর্থিক বছরে বাণিজ্যিক ভাবে তেলের উৎপাদন শুরু হলে তা শুধু এলাকারই নয়, গোটা রাজ্যের আর্থিক দিক থেকেও উন্নতি হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback