মতুয়াদের সব দাবি মেনেছি, ‌হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটিঃ বনগাঁয় মমতা


গত লোকসভার ফলের সমীক্ষায় উঠে আসে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। বনগাঁ, রানাঘাট লোকসভায় যেখানে মতুয়া ভোট বেশি সেখানে জিতেছে বিজেপি। এবার বিধানসভায় এই ভোট ফিরে পেতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বনগাঁর গোপালনগরে জনসভা করলেন তিনি। এবং মতুয়াদের জন্য বেশ কয়েকটি ঘোষণা করলেন। তাঁদের একের পর এক দাবিও মেনে নিলেন জনসভা থেকে।


 

 তিনি বলেন, ‘মতুয়াদের সব দাবি মেনে নিয়েছি’। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বাউড়ি, নমঃশূদ্রের পাশাপাশি মতুয়াদের জন্য উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যদের নাম দেওয়া হলে আমি কাজ শুরু করে দিতে পারব। এটা আপনাদের প্রথম দাবি ছিল’। এরপরেই তিনি হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, পঞ্চানন বর্মা, বীরসা মুন্ডার মতো হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতেও রাজ্য সরকার ছুটির দিন ঘোষণা করবে। প্রতি বছর মধুকৃষ্ণ ত্র‌য়োদশীতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিন পালিত হয়। তবে বছরে কোন দিন এই তিথি পড়ছে তা নতুন বছর শুরুর ৬ মাস আগে যখন ক্যালেন্ডার তৈরি হবে তখন জানিয়ে দেবেন। 


 


এদিনের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ফের সিএএ-এনআরসি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে বিজেপির নাম না নিয়ে এই ইস্যুতে তুলোধনা করেছন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এদের একবার সুযোগ দিলেই ঠাকুমার বাবা, ঠাকুরদাদার জন্ম তারিখ চাইবে। দিতে পারবেন? রাজ্য সরকার আপনাদের নাগরিক বলে দিয়েছে। রাজ্য সরকার সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দাঁড়িয়ে বলছি, মতুয়ারা সকলে নাগরিক। আপনাদের কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই। এনআরসি, এনপিআর করতে দেব না এই রাজ্যে’। 


 


তিনি আরও বলেন, মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদকে আগেই ১০ কোটি টাকা দিয়েছি। আপনারা কমিটি তৈরি করে জানিয়ে দিলেই কাজ শুরু হবে। ২০১৮ সালে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এরপর সেই কাজ আর সেভাবে এগোয়নি বলেই অভিযোগ ছিল মতুয়া সম্প্রদায়ের। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই ক্ষোভের আঁচ টের পেয়েই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচিলের কয়েকটি ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘আমরা কলেজ করে দিয়েছি, সেটা চালু করে গিয়েছে। 

এবার হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজও দ্রুত শুরু করা হবে’। এরপরই বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কথা দিলে কথা রাখি। এটা বিজেপি নয় যে ভোটের সময় বড় বড় কথা বলে আর পরে পালিয়ে যায়’। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, নানা ঘোষণার মাধ্যমে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের ক্ষোভ প্রশমিত করে বিধানসভায় নিজেদের জায়গা পাকা করতে চাইলেন।


Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم