প্রত্যেক বছরই বহু পর্যটক ব্যান্ডেল চার্চে আসেন। তবে শীত পড়তেই চার্চ মুখী হওয়া শুরু করেন দূরদূরান্তের মানুষ। আর ডিসেম্বর পড়তেই ভিড় বাড়তে থাকে। ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে ব্যান্ডেল চার্চে হাজার-হাজার মানুষের সমাগম হয়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বেশ কয়েকবছর আগে থেকে ২৫ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি ব্যান্ডেল চার্চের মূল ভবনের গেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে চার্চের সুদৃশ্য মাঠে ঢোকার অনুমতি মিলত। কিন্তু এবারে সেটাও হবে না। কারণ কোভিড আবহে ব্যান্ডেল চার্চের দরজা এখনও খোলেনি কর্তৃপক্ষ।
এবছর তা খোলার কোনরকম আশা নেই বলে জানিয়ে দিলেন চার্চের ফাদার ফ্রান্সিস। পাশাপাশি ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাত ১২টায় বড়দিনের ঐতিহ্যময় প্রার্থনাও এবারে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। যেটুকু হবে পরের দিন অর্থাৎ ২৫শে ডিসেম্বর সকাল ৯টায়। সেই প্রার্থনায় ৫০ জন করে চারবারে সর্বমোট ২০০জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বাকিদের দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে ভার্চুয়াল প্রার্থনার ব্যবস্থা থাকবে।
ব্যান্ডেল চার্চের ভার্চুয়াল প্রার্থনা অবশ্য লকডাউনের পর থেকেই প্রতি রবিবার শুরু হয়েছে বলে জানান ফাদার। ফাদার ফ্রান্সিস বলেন, এবারে বড়দিনে মা মেরি ও যিশুর সামনে সবার প্রথমে বিশ্বে করোনায় মৃতদের উদ্দেশে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্তদে সুস্থতা কামনা করেও আর্জিও প্রভুর কাছে জানানো হবে। ফাদার বলেন চার্চের গেট বন্ধ থাকায় এবার বাইরের গেটের সামনেই গোশালা তৈরি করা হবে, যাতে বাইরে থেকেই সাধারণ মানুষ বড়দিনে প্রভু যীশুর জন্মস্থান গোশালা দেখতে পারেন।
চার্চ বন্ধ থাকায় এখানকার ছোটবড় দোকানদারাও মহাসমস্যায় পড়েছেন। দোকানগুলি লকডাউনে পুরোপরি বন্ধ ছিল। কেউ সবজি, কেউবা মাছ বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। আনলক পর্ব চালু হওয়ায় বড়দিনের কথা ভেবে অনেকে দোকান খুললেও পর্যটকরা এসে চার্চ বন্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে তাঁদের বিক্রিবাটাও তলানিতে। একই অবস্থা এখানকার মাঝিদেরও। ব্যান্ডেল চার্চ দেখে বহু দর্শনার্থী গঙ্গাবক্ষে নৌকায় হুগলির ইমামবাড়ায় যেতেন। চার্চ বন্ধ থাকায় নৌকা করে ইমামবাড়া যাওয়ার আগ্রহ হারিয়েছেন সাধারন মানুষ। শীত পড়তে যেসমস্ত দর্শনার্থী ব্যান্ডেল চার্চে আসছেন তাঁরাও মন খারাপ করে বাড়ি ফিরছেন।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback