বৃহস্পতিবার সকালেই কলকাতার হেস্টিংসে দলীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে এক কর্মসূচি দিয়ে বঙ্গ সফর শুরু করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। দিন কয়েক আগেই রাজ্য সফর করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার রাজ্যে এলেন নাড্ডা। সাতসকালেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি এদিনের সফর শুরু করলেন। হেস্টিংসে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিলেন তিনি। এরপরই বক্তব্য রাখলেন বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বদের সামনে। তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে এল রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণের ঝাঁঝ। তিনি বলেন, বাংলায় ডেঙ্গি হল, চিকিৎসকদের হুমকি দিয়ে রিপোর্ট আটকে দিয়েছিলেন দিদি, এবার করোনার সময়ও কেন্দ্রীয় দলকে আটকে রেখে, করোনার প্রকৃত রিপোর্ট লুকিয়েছেন তিনি।
এমনকি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে অভিযোগ করেছেন দুর্নীতি ইস্যুতেও একহাত নিলেন রাজ্য সরকারকে। কেন্দ্রের আমফান ত্রাণের টাকা সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও আত্মস্যাৎ করেছে তৃণমূল নেতারা বলেও তোপ দাগেন নাড্ডা। এই প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আমফান দুর্নীতির অডিট করার আদালতের নির্দেশের বিরোধিতায় রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে গিয়েছিল। অপরদিকে তাঁর প্রশ্ন, স্বাধীনতার এত বছর পরও কেন মৌলিক আবশ্যকতার জন্য লড়াই করছে বাংলা?
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষকে বঞ্চিত করছেন বলেও এদিন ফের অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, বিজেপির লক্ষ্য ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলা। এই কারণেই LED রথের উদ্বোধন করলাম আজ। এই রথ প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রেই যাবে। সেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে বোঝানো হবে সাধারণ মানুষকে। বিজেপির এলইডি রথ প্রসঙ্গে বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা করেছি দু’কোটি মানুষের পরামর্শ জোগাড় করব। আর সেই পরামর্শগুলি নিয়েই হবে চূড়ান্ত নির্বাচনী ইস্তেহার’। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের ২৯৪টি আসনে ২৯৪টি এলইডি রথ যাবে। এই রথগুলির মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষ নিজেদের পরামর্শের নির্দিষ্ট বাক্সে জমা করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে ৩০,০০০ বাক্স রাখা হবে বাছাই করা ১০০টি কেন্দ্রে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পের বেহাল অবস্থা। এই অবস্থা থেকে বাংলাকে উদ্ধার করতে হলে সব ক্ষেত্রেই ‘পুশ’ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন জেপি নাড্ডা। যদিও এই ‘পুশ’ শব্দটি এদিন বারেবারে উঠে আসে তাঁর ভাষণে। নাড্ডার কথায়, ‘কাটমানি, তোলাবজি থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে হবে। বেআইনিভাবে কয়লা পাচার বন্ধ করা হবে। কাটমানি থেকে বাঁচিয়েই বাংলার উন্নয়ন করা হবে’। হেস্টিংস থেকে বেরিয়ে সোজা নৈহাটির উদ্দেশ্যে রওনা দেন জেপি নাড্ডা। সেখানে তিনি সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবনে যান। তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করে বঙ্কিম সংগ্রহশালা ঘুরে দেখেন। এরপরই নৈহাটির গৌরিপুরে গিয়ে এক শ্রমিক পরিবারে দুপুরের খাবার খান।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback