তাঁর স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁকেও অভাবের তাড়নায় মাঝেমধ্যেই দিনমজুরির কাজ করতে হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে রাজ্যে চলছে কার্যত লকডাউন। এই জন্য এখন রোজ কাজও পাচ্ছেন না রাজমিস্ত্রি শ্রাবণ বাউরি। আর দিনমজুরের কাজ করা তাঁর স্ত্রীই কিনা এখন বিধায়ক। চন্দনা বাউরি, একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছেন বাঁকুড়ার শালতোড়া থেকে। বিধায়কের টালির ঘরের চালে অবলিলায় ঢুকে পড়ে রোদের ছটা বা বৃষ্টির ফোঁটা। অভাব অনটন নিয়েই চলছিল চন্দনা বাউরির ছোট্ট সংসার। এহেন বিধায়কের সামনে এখন নতুন বিড়াম্বনা। বাঁকুড়ার কেলাই গ্রামের একটুকরো ফুটিফাটা বাড়িতে স্বামী, শাশুড়ি ও এক ছেলেকে নিয়েই কোনও রকমে চলছিল সংসার।
কিন্তু বর্তমানে তাঁর সংসার বেড়ে গিয়েছে। কারণ বিধায়ক হওয়ার পর নিরাপত্তা দিতে তাঁর বাড়িতে এখন রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জওয়ান। ফলে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সংসারে ওই চারজনের মুখে খাবার তুলে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি। তবে বিধায়কের এই অবস্থা দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাই। তাঁরাই পালা করে বাজার থেকে শাকসবজি বা চাল কিনে নিয়ে আসছেন। ছোট্ট এক চিলতে বাড়িতে নিজেদেরই ঠিকঠাক মাথা গোজার ঠাঁই হয়না। ফলে নিরাপত্তার দায়িত্বে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জওয়ানকে রেখেছেন বাড়ির অদূরে এক আত্মীয়ের নির্মিয়মান বাড়িতে।
চন্দনা বাউরির কথায়, রোজগার প্রায় বন্ধ। তাই নিজেদেরই চলছে কোনও রকমে। যেদিন যা জুটছে সেটাই খাচ্ছেন তাঁরা। সেসব তো আর অতিথিদের (কেন্দ্রীয় জওয়ান) খেতে দেওয়া যায় না? ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের কিনে আনা শাকসবজি দিয়েই রান্না করছেন তিনি। নিজে শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে রান্না করছেন। চন্দনার কথায়, দুঃখ একটাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের প্রাতঃরাশে মুড়ি-আলুভাজার বেশি কিছু দিতে পারছেন না। বিজেপি বিধায়ক আরও বললেন, প্রথমে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভাষা সমস্যার জন্য বোঝাতে পারেননি যে একমাস পরে তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রাখতে পারবেন। পরে অবশ্য কোনও নিরাপত্তা নিতেই চাননি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে আবেদন করায় তাঁর নিরাপত্তার জন্য চারজনের একটি দল পাঠিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। চন্দনার কথায়, কষ্ট লাগলেও জওয়ানদের সাহায্য নিতে হচ্ছে।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback